চবিতে 'ছাত্রলীগভীতি', প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে নেই ছাত্রদল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি হওয়ার কথা ৭১ সদস্যের। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটিতে জায়গা পেয়েছিলেন ২৪৩ জন। বিশাল বহরের এই কমিটি যেন কাগজেই সীমাবদ্ধ। গত দুই বছরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে বড় কোনো সভা–সমাবেশ করেননি। কার্যক্রম চালিয়েছেন অনেকটা গোপনে। এতে অংশ নিয়েছেন মাত্র ১৫–২০ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের দাবি, ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে না থাকার অন্যতম করণ ‘ছাত্রলীগভীতি’।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জানান, গত ২৩ জানুয়ারি ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে ছাত্রদলের দপ্তরবিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনকে মারধর করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এর আগে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মারধরের শিকার হন যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক তালিমুল ইসলাম। এভাবে গত দুই বছরে বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকে কোনো কারণ ছাড়াই মারধর করা হয় বলে দাবি তাঁদের।
ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত পাঁচ বছরে তাঁদের নেতা-কর্মীদের খুঁজে খুঁজে মারধর করেছে ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশও এসব ঘটনায় নীরব থেকেছে। তবে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর এলাকায় মিছিল করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মারধরের এ অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্ষমতা নেই। তারা ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে চায়। তাদের কোনো কর্মসূচি গত দুই বছরে দেখিনি। আর তাদের কমিটির মধ্যে ছাত্র কয়জন আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নানা কারণেই মারধরের কিছু ঘটনা ঘটেছে।’
ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ হওয়ার কথা দুই বছর। সে হিসাবে ২০১৮ সালেই বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনো নতুন কমিটি দেওয়া হয়নি। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খুরশেদুল আলম বলেন, নির্বাচনের পর থেকে ছাত্রদলের কোনো সভা ও মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে এর আগে মিছিল করেছেন তাঁরা। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের নেতাদের শ্রেণিকক্ষ থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছেন। পরীক্ষার হল থেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছেন, ফলে কৌশলগত কারণে তাঁরা এখন সক্রিয় নন। তবে শিগগির ক্যাম্পাসে দৃশ্যমান কর্মসূচি দেবেন বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের অসৌজন্যের কারণে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় নন। তবে নেতা-কর্মীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে সহাবস্থান বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হবে। নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।