১০ মাস পর মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে খুশি ৩ সন্তান

পিরোজপুর
পিরোজপুর

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার নান্টু ফরাজী পরিবার নিয়ে ভারতের দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। ১০ মাস আগে দেশে ফেরার পথে বনগাঁ জেলায় ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হন।

আটকের এক মাস পর ভারতের আদালত তাঁদের মুক্তির নির্দেশ দেন। এ সময় নান্টু ও তাঁর স্ত্রী দেশে ফিরতে পারলেও ভারতের ‘সেফ হোমে’ থেকে যায় তাঁদের তিন শিশু সন্তান। তবে বাংলাদেশ সরকারের চেষ্টায় ওই তিন শিশুকে দেশে আনা সম্ভব হয়েছে। মা-বাবার কাছ থেকে ৯ মাস বিচ্ছিন্ন থাকার পর তিন শিশু এক হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।

সন্তানদের ফিরে পেয়ে নান্টু ফরাজী ও লাকী বেগম দম্পতির বাড়িতে যেন এখন ঈদের আনন্দ।

নান্টু ফরাজী বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের ছাড়া ৯ মাস খুব কষ্টে দিন পার করেছি। সন্তানদের ফিরে পাওয়ার আশায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছি। শেষ পর্যন্ত তিন সন্তানকে ফিরে পেয়ে আমি খুবই খুশি।’

ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইন্দুরকানির রামচন্দ্রপুর গ্রামের নান্টু ফরাজী ও তাঁর স্ত্রী লাকী বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে ভারতের দিল্লিতে বসবাস করতেন। ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর দিল্লি থেকে দেশে ফেরার পথে ভারতের বনগাঁর গোপাল নগর থানা-পুলিশ তাঁদের আটক করে। এরপর ভারতীয় পুলিশ তাঁদের বনগাঁও আদালতে পাঠালে নান্টু ফরাজী ও তাঁর স্ত্রী লাকী বেগমকে দমদম সেন্ট্রাল জেলে এবং তিন সন্তান হেনা আক্তার (১৩), তানিয়া আক্তার (১১) ও মো. রায়হান উদ্দিন ফরাজীকে (৯) দুটি ‘সেফ হোমে’ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এক মাস পর আদালতের নির্দেশে ওই দম্পতিকে মুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশে ফেরার পর নান্টু ফরাজী সন্তানদের ফিরে পাওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেন। এরপর বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে গত শনিবার রায়হান উদ্দিন ফরাজীকে এবং সোমবার হেনা আক্তার ও তানিয়া আক্তারকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিজিবি বেনাপোল থানায় তিন শিশুকে হস্তান্তর করে। বেনাপোল থানা-পুলিশ নান্টু ফরাজীকে খবর পাঠিয়ে সন্তানদের তাঁর কাছে হস্তান্তর করে।

লাকী বেগম বলেন, ‘বাধ্য হয়ে তিন সন্তানকে ভারতে ছেড়ে আসায় কষ্টে পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। সন্তানদের পেয়ে খুশিতে অনেক কেঁদেছি।’

ছেলে রায়হান উদ্দিন ফরাজী বলে, ‘আব্বা-আম্মা ও বোনদের ছাড়া একা থাকতে কষ্ট হতো। সারা দিন কান্নাকাটি করতাম। সবাইকে ফিরে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।’

বেনাপোল পোর্ট থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, পিরোজপুরের ওই দম্পতির তিন শিশু সন্তানকে ভারত থেকে বিজিবি মাধ্যমে থানায় পাঠানো হয়। পরে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।