'ট্রাক নিয়ে গরু চুরি করতেন তাঁরা'

আন্তজেলা ডাকাত সন্দেহে মাগুরা সদর উপজেলায় গ্রেপ্তার সাত ব্যক্তি। সদর থানা, মাগুরা, ২৮ সেপ্টেম্বর। ছবি: কাজী আশিক রহমান
আন্তজেলা ডাকাত সন্দেহে মাগুরা সদর উপজেলায় গ্রেপ্তার সাত ব্যক্তি। সদর থানা, মাগুরা, ২৮ সেপ্টেম্বর। ছবি: কাজী আশিক রহমান

মাগুরায় আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য সন্দেহে নয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলা থেকে সাতজন ও শ্রীপুর উপজেলা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ১৮টি গরু ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক। শনিবার বিকেলে মাগুরার একটি আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠান।

শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাগুরার পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান। তিনি বলেছেন, এসব ব্যক্তি বিভিন্ন স্থানে ট্রাক নিয়ে গরু চুরি করতেন। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দিবাগত রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মাগুরা সদর থানায় আটক ব্যক্তিরা হলেন, ফরিদপুররে বোয়ালমারী উপজেলার মুরাইল পূর্বপাড়ার গ্রামের শিমুল মোল্যা (৩৫), কান্দাকুল গ্রামের মিলন শেখ (২৫), ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার কানাইপুরের দিদার (২৬), শ্রীফলতলি গ্রামের সুমন শেখ (২৫), মধুখালী উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের মিরাজ (৪০), পশ্চিম গঙ্গাবর্দি গ্রামের আলমগীর হোসেন (২৮), রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার গোবিন্দপুর পূর্ব পাড়ার মোশাররফ (২০)। এই সাত ব্যক্তি ব্যক্তি আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ছাড়া, শুক্রবার রাতে শ্রীপুরে থানায় জাহাঙ্গীর ( ২৬) ও আবুল হোসেন (২৫) নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে চারটি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়েছে।

সন্দেহভাজন ডাকাতদের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক। সদর থানা, মাগুরা, ২৮ সেপ্টেম্বর। ছবি: কাজী আশিক রহমান।
সন্দেহভাজন ডাকাতদের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক। সদর থানা, মাগুরা, ২৮ সেপ্টেম্বর। ছবি: কাজী আশিক রহমান।

পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান জানান, গত দুই সপ্তাহে আকস্মিকভাবে জেলায় কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। যার বেশির ভাগই হয়েছে রাস্তার পাশে ট্রাক ঠেকিয়ে গরু চুরির ঘটনা। গত মঙ্গলবার সদর উপজেলার লক্ষ্মীকান্দরের একটি খামার থেকে সাতটি গরু চুরি হয়। সবশেষ বৃহস্পতিবার রাতে অঙ্গরদাহ গ্রামে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ডাকাত দলের বাকি সদস্য পালিয়ে যায়। পরে শুক্রবার ভোরে ঢাকা রোড এলাকা থেকে একটি ট্রাকসহ ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার জানান, আটক ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের আলাল ব্যাপারীর ‘গোপন খামার’ থেকে ১৪টি চোরাই গরু উদ্ধার করে মাগুরা জেলা পুলিশ। এর মধ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীকান্দর থেকে চুরি যাওয়া তিনটি গরুও রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার শিশির নামে এক ব্যক্তি তাঁদের নেতা। তিনি নিজের দুটি ট্রাক দিয়ে বিভিন্ন জেলায় ডাকাতির এ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন। ডাকাত দলের হোতাসহ বাকি সদস্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, কাজী আহসান হাবীব, মো. ইব্রাহিম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই নয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডাকাতি ও চুরি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পুলিশ মামলা করেছে। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।