ক্যাসিনো-কাণ্ডে ৫ দিনেও অধরা দুই আ.লীগ নেতা

এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়া।
এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়া।

ক্যাসিনো–কাণ্ডে জড়িত পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগের নেতা এনামুল হক, রূপন ভূঁইয়াসহ চারজনকে পাঁচ দিনেও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাঁদের ধরতে অভিযান চালানোর কথা বলে আসছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।

গত মঙ্গলবার দুপুরে সূত্রাপুর থানার বানিয়ানগরে এনামুল, তাঁর ভাই রূপনের বাড়িসহ চারটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ৪ কোটি টাকার স্বর্ণালংকার ও ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে র‌্যাব। টাকা ও স্বর্ণালংকারে দুই ভাইয়ের সিন্দুক ভরা ছিল। এ ছাড়া তাঁরা গেন্ডারিয়া ও ওয়ারীতে আরও দুই ব্যক্তির বাসায় টাকা ও স্বর্ণালংকার রাখতেন। ওই দুজনের একজন রূপনের বন্ধু মো. হারুন অর রশিদ। তাঁর বাসা গেন্ডারিয়ায়। অন্যজন তাঁদের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ, তাঁর বাসা ওয়ারীতে। র‌্যাব ওই দুই বাসা থেকেও টাকা ও অস্ত্র উদ্ধার করে। এসব ঘটনায় র‍্যাব চারজনের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর থানায় মানি লন্ডারিং ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি করে চারটি মামলা করে। এ ছাড়া ওয়ারী থানায় একটি অস্ত্র আইনে এবং গেন্ডারিয়া থানায় মানি লন্ডারিং আইনে দুটি মামলা করা হয়।

এনামুল গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও তাঁর ছোট ভাই রূপন ভূঁইয়া একই কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁরা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবসহ একাধিক ক্লাবের ক্যাসিনো চালাতেন বলে র‌্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা ও ৮ কেজি স্বর্ণালংকার গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর ও ওয়ারী থানায় জমা দিয়েছে র‌্যাব-৩। এর মধ্যে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়েছে গেন্ডারিয়া থানায়। আর সূত্রাপুর থানায় জমা দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা, একই থানায় স্বর্ণালংকার জমা দেওয়া হয়েছে ৮ কেজি ৬৩ গ্রাম। ওয়ারী থানায় জমা দেওয়া হয়েছে ২ কোটি টাকা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুই ভাই জুয়ার ব্যবসায় নেমে পড়েন। তাঁরা ছয় ভাই। তাঁদের ছয় ভাইয়ের ১৪ ছেলে ও বহিরাগত ১২—এই ২৬ জন নিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজ বাহিনী গড়ে তুলেছেন।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার ইফতেখার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গেন্ডারিয়া থানায় মানি লন্ডারিং আইনে করা দুটি মামলা তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আর ওয়ারী থানায় করা অস্ত্র মামলাটির তদন্ত করছে ওই থানার পুলিশ। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

লোকমান-খালেদ-শফিক-শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদ

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তেজগাঁও থানার পুলিশ। এ ছাড়া ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস ক্লাবের সভাপতি ও ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সভাপতি শফিকুল ইসলাম এবং যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীমকে (জি কে শামীম) রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‍্যাব।