সারের দাম আরও কমবে: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি

কৃষকদের জন্য সারের দাম আরও কমানোর চিন্তা চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়ায় গত ১১ বছরে কৃষি খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। তবে সারের দাম এক টাকাও বাড়ানো হয়নি।

১৪তম সিটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, ‘ফসফেট সারের দাম আরও কমানোর চিন্তা চলছে। আমাদের সচিব ১৬ টাকা করার প্রস্তাব এনেছেন। সেটা ২০ টাকা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব করা হবে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ৭৭ টাকার সার ২২ টাকা, ৯০ টাকার ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট ২৫ টাকা ও ৬০ টাকার পটাশিয়াম ১৫ টাকায় দেওয়া হচ্ছে।

পুরোনো অভিজ্ঞতা থেকে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে গত মে-জুন মাস, এমনকি এখনো চাষিরা ধান বিক্রি করতে পারছে না। ধানের দাম পাচ্ছে না। এ বিষয়টা নিয়ে আমি খুবই আতঙ্কিত।’

উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আবার আমন ধান আসছে, মনে হয় ভালো ফলনও হবে। অগ্রহায়ণ মাসে আমরা কী করব?’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে ৬০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। আগে যা ছিল ৫০ শতাংশ। হাওর এলাকার জন্য যন্ত্রপাতি কিনতে ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়। ফলে ১০ লাখ টাকার কৃষিযন্ত্র কিনতে কৃষককে ৩ লাখ টাকা দিতে হয়।

তবে কৃষি খাতে কর্মসংস্থানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষিকে যতই লাভজনক করা হোক না কেন, এ খাতে লাখ লাখ শিক্ষিত যুবকের কর্মসংস্থান হবে না। এ জন্য কৃষি ও অকৃষি খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।

দেশের রাজনীতির বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন শুরু হয়েছে। অভিযোগ মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হয়েছে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। কিন্তু যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও আজকের এই অনুষ্ঠানে এসে উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প শুনতে পারত। এতে তাদের মধ্যেও উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ তৈরি হতো।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (সিডিএফ) নির্বাহী পরিচালক আবদুল আওয়াল, সিটিব্যাংক এনএর এদেশীয় প্রধান এন রাজশেকারান, শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হুমায়রা ইসলাম প্রমুখ।

পুরস্কার পেলেন যাঁরা
অনুষ্ঠানে চারটি বিভাগে মোট ১২ বিজয়ীকে ক্রেস্ট, চেক ও সনদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনটি ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি ও সনদ দেওয়া হয়।

বছরের শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে সেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার পুরস্কার পেয়েছেন রাজশাহীর মো. ইমদাদুল হক। একই বিভাগে রানারআপ হয়েছেন সাতক্ষীরার মো. খায়রুল আলম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মোহাম্মদ আবদুস সালাম।

বছরের শ্রেষ্ঠ নারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে সেরা উদ্যোক্তা হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মরিয়ম আক্তার। প্রথম রানারআপ হয়েছেন চট্টগ্রামের নুরজাহান ও দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন জামালপুরের অঞ্জনা বেগম।

বছরের শ্রেষ্ঠ তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে সেরা হয়েছেন বগুড়ার মো. রেজওয়ানুল ইসলাম। প্রথম রানারআপ হয়েছেন পিরোজপুরের মনসুরা ও দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন চট্টগ্রামের মোহাম্মদ আকবর হোসেন।

বছরের শ্রেষ্ঠ কৃষি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা শ্রেণিতে সেরা হয়েছেন কক্সবাজারের মো. মোকাদ্দেছুর রহমান। প্রথম রানারআপ হয়েছেন নাটোরের সেলিম রেজা ও দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন সাতক্ষীরার ছালমা খাতুন।

বছরের সৃজনশীল ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা শ্রেণিতে পদক পেয়েছে সিরাজগঞ্জের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি), দিনাজপুরের গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র (জিবিকে) ও কোস্টাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট (কোস্ট ট্রাস্ট)।

সিটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পুরস্কারটি প্রদান করা হয়েছে সিটি ফাউন্ডেশনের সহায়তায়, বাস্তবায়ন করেছে সিটিব্যাংক এনএ বাংলাদেশ ও স্থানীয় সহযোগী হিসেবে সহায়তা করেছে শক্তি ফাউন্ডেশন।