'ঋণের টাকা শোধে' ছেলেকে বিক্রি, মাসহ গ্রেপ্তার ৩

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নিজের ছেলেকে বিক্রি করে অপহরণ নাটক সাজানোর অভিযোগে ওই শিশুর মাসহ তিন নারীকে গ্রেপ্তার করেছে নোয়াখালী পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তার হওয়া ওই মায়ের দাবি, ঋণের টাকা শোধ করার জন্য তিনি তাঁর ছেলেকে বিক্রি করেছিলেন।

গতকাল রোববার মধ্যরাতে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার কালারাইতা গ্রামের খামারবাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তার তিন নারীকে ফেনীর বিচারিক হাকিম আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার নারীরা হলেন কুমিল্লার লাঙ্গলকোট উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের মো. আলাউদ্দিনের স্ত্রী ও শিশুটির মা রেহেনা আক্তার (৩০), তাঁর আত্মীয় নোয়াখালীর সেনবাগের পারভীন আক্তার (২২) ও শিশুসন্তানটির ক্রেতা মাফিয়া আক্তার (৪০)।

আজ ফেনী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রণজিৎ কুমার বড়ুয়া বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল থেকে রেহেনা আক্তারের এক বছর বয়সী ছেলে অপহরণের খবর পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ফেনী সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা করেন শিশুটির মা রেহেনা আক্তার।

মামলার এজাহারে বলা হয়, তিনি (রেহেনা) স্বামীর বাড়ি নাঙ্গলকোট থেকে বাবার বাড়ি ফেনীর আমিন বাজার যাচ্ছিলেন। পথে মহিপালে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করার সময় অজ্ঞাতনামা এক অটোরিকশাচালক তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন।

ওই মামলার পর শিশুটিকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। রোববার মধ্যরাতে শিশুটিকে উদ্ধারের পর তার বাবার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে পুলিশ জানতে পারে, অপহরণ নয়, শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন তার মা।

এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে শিশুটির মা রেহেনা স্বীকার করেছেন, এলাকায় স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে তিনি তাঁর ছেলেকে পারভীনের কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন।

জানতে চাইলে রেহেনার রাজমিস্ত্রি স্বামী আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমার অগোচরে রেহেনা ছেলেকে বিক্রি করে অপহরণের নাটক সাজিয়েছে। সে ঋণ নিয়ে তার ভাইকে দিয়েছে। টাকা নিয়ে তার ভাই কী করেছে, তা জানি না। তবে রেহেনা বলছে, টাকা হারিয়ে গেছে।’ এ ঘটনায় দায়ী সবার বিচার দাবি করেছেন তিনি।

ফেনীর পুলিশ সুপার খন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ফেনী থানায় করা অপহরণের মামলাটি তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তারপর এ বিষয়ে নতুন মামলা করা হবে। শিশুটির মাসহ গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।