অর্থ পাচার মামলায় শামীমের সাত দেহরক্ষী রিমান্ডে

গ্রেপ্তার অবস্থায় জি কে শামীমের কয়েকজন দেহরক্ষী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
গ্রেপ্তার অবস্থায় জি কে শামীমের কয়েকজন দেহরক্ষী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

অর্থ পাচার মামলায় যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীমের (জি কে শামীম) সাত দেহরক্ষীকে এবার চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে অস্ত্র মামলায় এই সাত দেহরক্ষীকে চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

সাত দেহরক্ষী হলেন, নওগাঁর দেলোয়ার হোসেন, গোপালগঞ্জের মুরাদ হোসেন, বাড্ডার জাহিদুল ইসলাম, যশোরের শহিদুল ইসলাম, ভোলার কামাল হোসেন, নীলফামারীর সামসাদ হোসেন ও বাগেরহাটের আমিনুল ইসলাম।

গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানের নিকেতনে অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা শামীমসহ তাঁর সাত দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। উদ্ধার করা হয় বিদেশি মদ, নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা। এ ঘটনায় র‍্যাব বাদী হয়ে শামীমসহ সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র ও অর্থপাচারের তিনটি মামলা হয়।

অস্ত্র ও মাদক মামলায় পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর শামীমসহ তাঁর সাত দেহরক্ষীকে আদালতে হাজির করে গুলশান থানা-পুলিশ। আদালত শামীমকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন । আর তাঁর সাত দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

জি কে শামীম। প্রথম আলো ফাইল ছবি
জি কে শামীম। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আদালত সূত্র বলছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অর্থ পাচার মামলায় শামীমসহ আটজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে। আদালত তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দেন।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) শামীমের সাত দেহরক্ষীকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ।

আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে সিআইডি বলেছে, আসামি শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। সাত দেহরক্ষী শামীমের সব দুষ্কর্মের সহযোগী। আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে নিজ নামের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র প্রকাশ্য বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে আসছিলেন। এর মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।

রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, অপরাধের মাধ্যমে অর্জন করা বিপুল অঙ্কের টাকা উদ্ধারের জন্য এই আসাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

তবে সাত দেহরক্ষীর আইনজীবী আবদুর রহমান হাওলাদার আদালতের কাছে দাবি করেন, জীবিকার তাগিদে এই আসামিরা চাকরি নিয়েছিলেন। তাঁদের সব অস্ত্র লাইসেন্স আছে। কোনো অপরাধ তাঁরা করেননি।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে শামীমের সাত দেহরক্ষীকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। আদালত সূত্র বলছে, বুধবার (২ অক্টোবর) শামীমকে আদালতে হাজির করা হতে পারে।