উচ্ছেদ বন্ধে বরিশালে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক-মালিকদের অনশন

ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক–মালিকদের বরিশাল জেলার অশ্বিনীকুমার হল চত্বরে আমরণ অনশন কর্মসূচি। ছবি: সাইয়ান
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক–মালিকদের বরিশাল জেলার অশ্বিনীকুমার হল চত্বরে আমরণ অনশন কর্মসূচি। ছবি: সাইয়ান

বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশা উচ্ছেদ বন্ধে বরিশালে অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন চালক, শ্রমিক ও মালিকেরা। এ ছাড়া তাঁরা প্রয়োজনীয় নীতিমালার ভিত্তিতে নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল এবং প্রশাসনের জব্দ করা ব্যাটারি ও মোটর ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে বরিশাল নগরের অশ্বিনীকুমার টাউন হল চত্বরে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা।

বরিশাল নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এক ঘোষণায় ১ অক্টোবর থেকে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক এবং সব সড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে।

ট্রাফিক বিভাগের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক-মালিক সংগ্রাম কমিটি, নগর রিকশা, ভ্যান চালক-শ্রমিক ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্যোগে এই অনশন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

অনশন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সদস্যসচিব ও রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা মনীষা চক্রবর্তী।

অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাসদের জেলা আহ্বায়ক ইমরান হাবিব, শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুর রাজ্জাক, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক দুলাল মজুমদার, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, হোটেল রেস্তোরাঁ শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবুল প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, শ্রমিকদের পেটে লাথি মেরে তাঁদের সন্তানদের অভুক্ত রাখতে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বরিশাল নগরে প্রায় দেড় হাজার ব্যাটারি চালিত রিকশা শ্রমিক রয়েছেন। তাঁরা আজ মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে এমন সিদ্ধান্ত শ্রমিকেরা কখনোই মেনে নেবেন না। যাঁরা তড়িঘড়ি করে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা শ্রমিকদের কথা ভাবেননি, ভাবেননি শ্রমিকদের পরিবারের কথা।

বক্তারা আরও বলেন, বয়স্ক আর পায়ের রিকশা যেসব শ্রমিক চালাতে পারেন না, তাঁরাই ব্যাটারিচালিত রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের দেখামাত্রই পুলিশ আটক করে ব্যাটারি, মোটর জব্দ করে নিয়ে যাচ্ছে। দেড় মাস ধরে পুলিশ অন্তত ৫০০ রিকশার ব্যাটারি আটকে রেখেছে, যার মূল্য দুই কোটি টাকা। এই অভাবী ও গরিব শ্রমজীবীদের কথা চিন্তা করে দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে।

এদিকে অনশন কর্মসূচি পালনের সময় দুপুর পর্যন্ত প্রশাসন কিংবা বরিশাল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আশ্বাস পাননি আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।