আশরাফকে নিতে আমেরিকা থেকে ফরিদপুরে শ্যারুন

বউভাত অনুষ্ঠানে স্বামী আশরাফ উদ্দিনের সঙ্গে শ্যারুন খান। ফরিদপুর, ২ অক্টোবর। ছবি: প্রবীর কান্তি বালা
বউভাত অনুষ্ঠানে স্বামী আশরাফ উদ্দিনের সঙ্গে শ্যারুন খান। ফরিদপুর, ২ অক্টোবর। ছবি: প্রবীর কান্তি বালা

বয়স কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি আশরাফ উদ্দিন (২৬) ও নিউইয়র্কের নারী শ্যারুন খানের (৪০) মধ্যে। প্রেমের টানে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন শ্যারুন খান। প্রায় দেড় বছর পর আজ বুধবার হলো তাঁদের বউভাতের অনুষ্ঠান। শ্যারুন এবার বাংলাদেশে এসেছেন স্বামীকে আমেরিকায় উড়িয়ে নিতে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের মো. আলাউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে আশরাফ উদ্দিন। তিনি (আশরাফ) ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেছেন। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় আশরাফ। তাঁর বাবা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে গাড়িচালক পদে কর্মরত।

শ্যারুন খান আমেরিকান মুসলিম। তিনি নিউইয়র্কে একটি ব্যাংকে কর্মরত বলে জানিয়েছেন। তাঁর বাবা সলেমান খান ও মা এলিজা খান। দুই বোনের মধ্যে শ্যারুন বড়।

শ্যারুনের সঙ্গে আশরাফের পরিচয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। গত বছরের ৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আসেন শ্যারুন। এরপর ওই বছরের ১০ এপ্রিল ঢাকায় একটি কাজি অফিসে বিয়ে করেন তাঁরা ।

কেন শ্যারুনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন? জানতে চাইলে আশরাফের উত্তর, ‘ওর মন আমাকে আকৃষ্ট করেছে। ওর মধ্যে কোনো জটিলতা, সন্দেহ বা অবিশ্বাসের ছায়া দেখিনি। আসলে জীবনে বাঁচতে হলে শান্তিটাই মুখ্য, বয়স বেশি না কম কিংবা দেখতে ভালো না খারাপ, সেটা বিচার্য কোনো বিষয় নয়।’

একই প্রশ্ন করা হলো শ্যারুনকে। শ্যারুন যা বললেন তার মানে দাঁড়ায়, আশরাফ তাঁর প্রতি খুব যত্নশীল। আমেরিকা খুব ব্যস্ত। সেখানে কেউ কারও কোনো খবর নেয় না। এমনকি নিকটাত্মীয়ও না। কিন্তু পরিচয়ের পর থেকে আশরাফ সব সময় তাঁর খোঁজখবর নিতেন। তিনি খেয়েছেন কি না, শরীর কেমন—এসব জানতে চাইতেন। আশরাফের এমন আচরণে তিনি আপ্লুত।

শ্যারুনের ভাষ্য, প্রেম বা বিয়ে যা-ই বলা হোক না কেন, এর মূল ভিত্তি হচ্ছে ‘কেয়ারিং’। শ্যারুন জানান, এবার তিনি বাংলাদেশে এসেছেন মূলত স্বামীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি গত ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন। আশরাফের জন্য ভিসা পেতে যত দিন লাগে, তত দিনই তিনি এখানে থাকবেন।

গ্রামের বাড়িতে হওয়া আশরাফের বউভাত অনুষ্ঠানে উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ করা গেছে। এই অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পাশাপাশি আশপাশের সব লোকেরই নিমন্ত্রণ ছিল বলে জানিয়েছেন আশরাফের বাবা আলাউদ্দিন মাতুব্বর।

আলাউদ্দিন মাতুব্বর শ্যারুনের প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে বউমা এমন ব্যবহার করছে যে, আমরা অত্যন্ত খুশি। বাংলা না বুঝলেও আমাদের তার ভাষা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে না।’

আশরাফের মা নার্গিস আক্তার বলেন, ‘এমন বউ পেয়ে আমি এত খুশি, তা বলার নয়। শ্যারুন আমাকে আম্মু বলে যে ডাকটি দেয়, তাতে আমি গর্ব অনুভব করি।’

আরও পড়ুন...
 ফেসবুকে প্রেম, ব্রাজিল থেকে তরুণী রাজবাড়ীতে
 প্রেমের টানে মালয়েশীয় তরুণী টাঙ্গাইলে
 প্রেমের টানে মার্কিন নারী সারলেট এখন লক্ষ্মীপুরে
 প্রেমের টানে জার্মান নারী খুলনায়
 প্রেমের টানে থাই-কন্যা বাংলাদেশে
 প্রেমের টানে এবার এলেন ভারতীয় তরুণী
 প্রেমের টানে এসে বাংলাদেশে আটক কিশোরী
 হায় রে প্রেমের বাঁশি, রইতে দিল না ঘরেতে