চীনা রেস্তোরাঁয় ক্যাসিনো মেশিন মাহাজং

বনানীতে একটি চীনা রেস্তোরাঁ থেকে উদ্ধার করা হয় ‘মাহাজং’। ঢাকা, ২ অক্টোবর। ছবি: সংগৃহীত
বনানীতে একটি চীনা রেস্তোরাঁ থেকে উদ্ধার করা হয় ‘মাহাজং’। ঢাকা, ২ অক্টোবর। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বনানীর একটি চীনা রেস্তোরাঁ থেকে ক্যাসিনোতে ব্যবহার করা হয়—এমন একটি মেশিন ‘মাহাজং’ উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। আজ বুধবার এক অভিযানে এটি উদ্ধার করা হয়।

শুল্ক গোয়েন্দা জানিয়েছে, নিউ ড্রাগন চাইনিজ রেস্টুরেন্টে হংকং ও ম্যাকাওয়ের ক্যাসিনোর বিখ্যাত জুয়া খেলার মেশিন ‘মাহাজং’ ব্যবহার করা হচ্ছে—এমন তথ্য পেয়ে দুপুরে সংস্থার অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান ও শামীমা আক্তারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি দল অভিযান চালায়। বনানীর এ ব্লকের ১৮ নম্বর সড়কের ২৩ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত নিউ ড্রাগন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট থেকে মাহাজং মেশিন উদ্ধার করা হয়।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আমদানিকারক নিনাদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল চীন থেকে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ২০টি কার্টনে সাত সেট মাহাজং মেশিন আমদানি করে। আমদানি করা পণ্যগুলো তারা বিভিন্ন চীনা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে।

জানা যায়, ১৯৪৫ সালে চীনে কমিউনিস্ট বিপ্লবের উত্থানকালে আসক্তির জন্য মাহাজং নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমানে ম্যাকাও ও হংকংয়ের ক্যাসিনোতে মাহাজং জুয়া খেলার জন্য ব্যবহৃত হয়। নিউ ড্রাগন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট থেকে উদ্ধার করা মাহাজং মেশিনটি বিদ্যুৎ–চালিত।

শুল্ক গোয়েন্দা বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছে, ওই রেস্তোরাঁয় চীনা নাগরিকদের যাতায়াত বেশি ছিল এবং সেখানে মাহাজং ব্যবহার করে জুয়া খেলা হতো।

শুল্ক গোয়েন্দা বলছে, মাহাজং আমদানিতে বিপুল পরিমাণ শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। আমদানিকারক সাত সেট মাহাজং মেশিনের জন্য ৪৭ হাজার ৮১৫ টাকা ঘোষণা দিয়ে পণ্যের চালান খালাস করেছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এ ধরনের প্রতিটি ইলেকট্রিক মেশিনের দাম ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সাতটি মেশিনের দাম আনুমানিক ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ওই সব পণ্যের আমদানি পর্যায়ে প্রযোজ্য শুল্ককরের পরিমাণ ১০ লাখ ২৫ হাজার। কিন্তু আমদানিকারক আমদানি পর্যায়ে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ৯ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৫ টাকা শুল্ককর ফাঁকি দিয়েছে।

এই আমদানিকারকের আমদানি করা অন্যান্য মাহাজং মেশিনের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে শুল্ক গোয়েন্দা। সেগুলোকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। উদ্ধার করা পণ্যের চালানের শুল্ক ফাঁকির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা।