ওসামার সঙ্গে বৈঠককারী হুজি নেতা আতিকুল্লাহসহ গ্রেপ্তার ৩

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. আতিকুল্লাহ ওরফে আসাদুল্লাহ ওরফে জুলফিকারসহ (৪৯) তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ বলছে, আতিকুল্লাহ আফগানিস্তানে গিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলেন: বোরহান উদ্দিন রাব্বানী (৪২) ও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ওরফে শামীম (৪৩)। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের কাউন্টার টেররিজম বিভাগ বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জ-২ এর বড় মসজিদ সংলগ্ন মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তার তিনজন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি, বি) সদস্য। এদের মধ্যে মো. আতিকুল্লাহ আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় সেখানে যান। আফগানিস্তানে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন, আইমান আল জাওয়াহিরি ও তালেবান নেতা মোল্লা মুহাম্মদ ওমরের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন তিনি। আতিকুল্লাহ সম্প্রতি দেশে ফেরেন।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, মো. আতিকুল্লাহ হুজিবির মুফতি হান্নানের ১৯৯৬ সালে গঠিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি হুজিবির বায়তুল মাল ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বশীল ছিলেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথমদিকে তিনি দুবাই হয়ে সৌদি আরব পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করেন। তিনি সাংগঠনিক কাজে একাধিক বার পাকিস্তানে গিয়েছিলেন।

ডিএমপি জানায়, আতিকুল্লাহ আফগান ফেরত যোদ্ধা। এ ছাড়া তিনি বোমা বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক থেকে চলতি বছর মার্চে দেশে ফেরেন আতিকুল্লাহ। দেশে ফিরে সংগঠনের পুরোনো সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সাংগঠনিক কাজে সক্রিয় করার কাজ করছিলেন তিনি। পাশাপাশি আতিকুল্লাহ নতুন সদস্য সংগ্রহ করে সংগঠনের কার্যক্রম চালু করার মিশন নিয়ে ব্যাপক কর্মতৎপরতা চালাচ্ছিলেন। ইতিমধ্যে তিনি সংগঠনকে গতিশীল করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সফর করে এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস হতে সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিলেন আতিকুল্লাহ। পাকিস্তান, দুবাই ও সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে।

গ্রেপ্তার অন্য দুজনের মধ্যে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ওরফে শামীম হুজিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি এবং মো. বোরহান উদ্দিন রাব্বানী সংগঠনের ফেনী জেলার দায়িত্বের রয়েছেন। তারা বর্তমানে কাশ্মীর সমস্যা এবং রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে পরস্পর যোগসাজশে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন। গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।