মির্জাগঞ্জে নদী ভাঙনের কবলে নারীর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় পায়রা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে আলেয়া বেগম (৪৫) নামে এক নারী মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের রামপুর লঞ্চঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আলেয়া বেগম উপজেলার পিঁপড়াখালী গ্রামের কাঞ্চন সিকদারের স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে খেয়া নৌকায় করে পায়রা নদী পার হন আলেয়া। এ সময় রামপুর লঞ্চঘাট এলাকায় দাঁড়ানো অবস্থায় বিশাল আকৃতির মাটি আছড়ে পড়লে তিনি নদীতে পড়ে যান। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর নদী থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামপুর গ্রামের লঞ্চঘাটের পন্টুনের সংযোগ সড়কসহ গ্যাংওয়ে নদীতে ভেসে গেছে। পন্টুনের টানা রশি অনেকটাই ছিঁড়ে গেছে। এটি যেকোনো সময় নদীতে ভেসে যেতে পারে। এ ছাড়া বেড়িবাঁধের অনেক জায়গা জুড়ে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, গত দুদিনে রামপুর ভিকাখালী এলাকায় পায়রা নদীর জোয়ার-ভাটার তীব্র স্রোতের চাপে প্রায় শতাধিক একর ফসলি জমি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ, বাড়ি ঘর, মসজিদ, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙন কবলিত অসহায় পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ ইতিমধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে। কেউ বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

পায়রা নদীর ভাঙন কবলিত রামপুর গ্রামের মো. মিলন সিকদার ও মো. মজিবর সিকদার জানান, কয়েক দিনে পায়রা নদীর ভাঙনে তাদের বাড়ি সম্পূর্ণ নদী গর্ভে চলে গেছে। এর আগে নদীর ভাঙনে রামপুর ও আরজি দুর্গাপুর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।

ওই এলাকার মো. সোহেল খান জানান, এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে মাধবখালী ইউনিয়নের রামপুর, আর্জিদুর্গাপুর, মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ভিকাখালী, সুন্দ্রা কালিকাপুর, পিঁপড়াখালী গ্রাম ও কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কাকড়াবুনিয়া গ্রাম উপজেলার মানচিত্র থেকে অচিরেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খান মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের কাজ চলমান। তবে ইদানীং ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় নতুন বেড়িবাঁধও নদীতে চলে যাচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, পায়রা নদীর ভাঙন রোধে খুব শিগগিরই মজবুত তীর রক্ষা বাঁধ তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।