মনিরামপুরে দুই মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণ সহযোগিতার অভিযোগে মামলা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় দশম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মাদ্রাসাটির এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও আরেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ওই দুই শিক্ষক পলাতক।

গত সোমবার রাতে উপজেলার একটি মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় সান্ধ্যকালীন কোচিংয়ের সময় এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। ছাত্রীর বাবা গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় মামলা করেন।

অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন, তরিকুল ইসলাম (৩২) ও নজরুল ইসলাম (৫০)। তরিকুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ এবং নজরুল তাঁকে (তরিকুল) ধর্ষণে সহায়তা করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়ে। তরিকুল ওই মাদ্রাসার কৃষি বিষয়ের শিক্ষক। আর নজরুল সহকারী মৌলভি পদে কর্মরত।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দাখিল ও জেডিসি পরীক্ষাকে সামনে রেখে ওই মাদ্রাসায় সান্ধ্যকালীন কোচিং চালু করে কর্তৃপক্ষ।। গত ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে এই কোচিং চলছিল। প্রতিদিন দুজন করে শিক্ষক ১৭ জনের মতো ছাত্রীকে কোচিং করান। সন্ধ্যা সাতটা থেকে শুরু হয়ে রাত নয়টা পর্যন্ত এ কোচিং চলে। গত সোমবার কৃষি বিষয়ের শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ও সহকারী মৌলভি শিক্ষক নজরুল ইসলাম কোচিং করান। রাত সাড়ে আটটার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। এ সময় তরিকুল ইসলাম ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসাসংলগ্ন বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এই ঘটনায় তরিকুলকে সহায়তা করেন নজরুল।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর মাদ্রাসার শৌচাগারের পাশ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকালে ওই শিক্ষার্থীকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হলে বুধবার তাকে বাড়ি আনা হয়। এরপর সে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে। গতকাল তাকে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বর্তমানে সে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে, গতকাল বিকেলে স্থানীয়রা ওই মাদ্রাসায় হামলা চালায়। এ সময় তারা মাদ্রাসার সুপার শাহাদাৎ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে।

মাদ্রাসার সুপার শাহাদাৎ হোসেন প্রথম আলোকে বলে, গতকাল মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠকে ওই দুই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যশোরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (মনিরামপুর সার্কেল) মো. রাকিব হাসান বলেন, ‘আগামীকাল যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ২২ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’