বিদ্যুতের দাবিতে জেনেভা ক্যাম্পে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

পুলিশের পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করেন ক্যাম্পবাসী। ছবি: সাজিদ হোসেন
পুলিশের পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করেন ক্যাম্পবাসী। ছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে বিদ্যুতের দাবিতে আজ শনিবার ক্যাম্পবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। পুলিশের দাবি, এ ঘটনায় তাদের ১৫ সদস্য আহত হয়েছেন। ক্যাম্পবাসীরা বলছেন, তাঁদের অর্ধশত বাসিন্দা আহত।

গতকাল শুক্রবার থেকে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। আটকে পড়া পাকিস্তানিদের অভিযোগ, প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা করে তাদের বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকতে হয়। এই ক্ষোভে গতকাল থেকে তারা আন্দোলন শুরু করে। গতকাল বেশ কিছু সময় ধরে আন্দোলন চলে। আজ দুপুর ১২টা থেকে আন্দোলনকারীরা জেনেভা ক্যাম্প থেকে মোস্তাকিম কাবাব রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় তাদের সংঘর্ষ হয়।

বেলা দেড়টা থেকে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের পেছনের সড়কেও সংঘর্ষ ছড়িয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করে উল্টে দিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা চালায়।

জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এখানে দুই মাস ধরে বিদ্যুতের সমস্যা চলছে। প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকে না। আমার মেয়ে অসুস্থ, তাকে এই এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিতে হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বলা হলেও তিনি এর কোনো সুরাহা করেননি।’

আরও কয়েকজন ক্যাম্পবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে যত স্ট্রান্ডেড পাকিস্তানিজ জেনারেল রিপ্যাট্রিয়েশন কমিটির (এসপিজিআরসি) ক্যাম্প রয়েছে, এর মধ্যে এখানেই বিদ্যুৎ নিয়ে ঝামেলা চলছে। তাঁরা জানান, এখানে প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দার বসবাস। তাঁদের এখানকার বিদ্যুৎ বিল দেয় জাতিসংঘ। তাঁদের অভিযোগ, প্রথমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা চালান। এরপর পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহজাহান রোডে মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভকারীরা দাঁড়ায়। এর প্রায় ৫০০ গজ দূরে অবস্থান নিয়েছে বেশ কয়েকজন পুলিশ, দাঙ্গা পুলিশ। তাদের সঙ্গে রয়েছে জলকামান, সাঁজোয়া যান। পুলিশের পেছনে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নও (র‍্যাব-২) রয়েছে। বিদ্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে উসকানিমূলক আহ্বান জানাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তাঁদের প্রায় ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। কারও পায়ে, কারও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লেগেছে। তাঁদের পিকআপ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন।