বুয়েট ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগরে মানববন্ধন

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। সাভার, ঢাকা, ০৭ অক্টোবর। ছবি: মাইদুল ইসলাম
বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। সাভার, ঢাকা, ০৭ অক্টোবর। ছবি: মাইদুল ইসলাম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারসংলগ্ন সড়কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার বেলা সোয়া একটায় মানববন্ধন করেন। সেখান থেকে পৌনে দুইটায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে পরিবহন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা গতকাল রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, বাংলাদেশ এমন একটা সময় অতিক্রম করছে, ‘যখন গণতন্ত্রের লেবাসে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করা হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে যে কয়েকটি চুক্তি করা হয়েছে, তার মধ্যে একটাও কি বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক চুক্তি হয়েছে? একটাতেও কি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হয়েছে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিক্রি করে বাংলাদেশের মানুষকে ভারতের কাছে নতজানু করে ফেলা হয়েছে। সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যত দিন পর্যন্ত না আমরা রাষ্ট্রীয় অনাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারব, তত দিন আবরাররা জীবন দিতে থাকবে।’

সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রমে ক্রমে এমন জায়গায় পৌঁছাচ্ছে, যেখানে আপন সন্তানকে যদি মেরে ফেলা হয়, তখন বাবা প্রতিবাদ করতে ভয় পাবে। আমি আগামী প্রজন্মকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাহস নিয়ে দাঁড়াতে বলি। আমরা সরকারকে বলে দিতে চাই যে লাঠিয়ালেরা আজ সরকারের পক্ষে সন্ত্রাস করছে, তারা কখনই সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘ভারতের কাছে বাংলাদেশের সম্পদ তুলে দেওয়ার সমালোচনা করেছিল আবরার। তারপর তাঁকে হত্যা করে শিবির ট্যাগ দেওয়া হলো। যেন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একমাত্র টেন্ডারধারী। পাকিস্তান আমলে যেমন শাসকের সমালোচনা করলে তাঁকে কমিউনিস্ট বলা হতো, ভারতের দালাল বলা হতো; আজকে তেমনি বাংলাদেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সমালোচনা করলে তাঁকে শিবির আখ্যা দেওয়া হয়।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ ভারত–তোষণ নীতিতে চলছে, নিজেদের দাবিদাওয়া আদায় না করে ভারতকে সবকিছু দিয়ে দিচ্ছে। ভারতের দুটি রাজ্য যখন কোনো বিনিময় ছাড়া একে অপরকে কিছু দিতে রাজি হয় না, সেখানে বাংলাদেশ কোনো বিনিময় ছাড়া ভারতকে আমাদের সমস্ত সম্পদ তুলে দিচ্ছে।’