মিয়ানমারের ওপর প্রভাব খাটাতে ব্যর্থতা সবার: জাতিসংঘ

‘ডিকাব টক’–এ বক্তব্য দেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। ছবি: প্রথম আলো
‘ডিকাব টক’–এ বক্তব্য দেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। ছবি: প্রথম আলো

রোহিঙ্গা সমস্যার একটি টেকসই সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ওপর প্রভাব বিস্তারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ‘সম্মিলিত ব্যর্থতার’ দায় স্বীকার করে নিয়েছে জাতিসংঘ। বুধবার ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে এই ব্যর্থতার কথা বলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-বিস মিলনায়তনে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মিয়া সেপ্পো বলেন, মিয়ানমারের ওপর প্রভাব খাটাতে সম্মিলিত ব্যর্থতা রয়েছে। এটা শুধু জাতিসংঘের ব্যর্থতা নয়। আরও অনেকে এতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁর মতে, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে যে কোনো উদ্যোগ টেকসই হওয়াটা জরুরি। এ সমস্যার যে জটিলতা রয়েছে, সেটা কেউই অগ্রাহ্য করে বলে তিনি মনে করেন না।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান কোনো সহজ বিষয় নয়। ফিরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গারা যাতে আবারও চলে আসতে বাধ্য না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

গত কয়েক মাসে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে ধারণা এবং গণমাধ্যমে তাদের অপরাধী ও নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে তুলে ধরার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘আমাদের ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না যে, তারাও আপনার, আমার মতো মানুষ। তাঁদেরও স্বপ্ন ও প্রত্যাশা আছে।’ রোহিঙ্গা সমস্যার উৎস আর সমাধান দুটোই মিয়ানমারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেন। বাংলাদেশকে সাফল্যের উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে মিয়া সেপ্পো বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ চমৎকার অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য মাইল ফলক অর্জনের কথা রয়েছে।

ডিকাব টকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সময় তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের ভূমিকা, গত মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), মানবাধিকার, নারীর প্রতি সহিংসতা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও গণমাধ্যমের সঙ্গে অংশীদারিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। সুশাসন, আইনের শাসন ও মানবাধিকার ইস্যুতে আলোচনা ও বিতর্কে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে মিয়া সেপ্পো বলেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যম জবাবদিহিতায় ভূমিকা রাখে। ডিকাব সভাপতি রাহীদ এজাজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব।