সম্পাদকের প্রতীকী দায়িত্বে ফারিয়া

প্রতীকী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফারিয়া মেহজাবিন খান। গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে।  ছবি: প্রথম আলো
প্রতীকী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফারিয়া মেহজাবিন খান। গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

বেলা আড়াইটা, সবে বৃষ্টি থেমেছে। এর মধ্যেই প্রথম আলো সম্পাদকের কক্ষে হাজির হলেন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ফারিয়া মেহজাবিন খান। ফারিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজের চেয়ারে বসিয়ে দেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। হস্তান্তর করেন সম্পাদকের পরিচয়পত্র।

আজ আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। দিবসটিকে ঘিরে কন্যাশিশুদের নেতৃত্বে রাখার প্রয়াস থেকেই এ আয়োজন। ‘গার্লস টেকওভার’ শীর্ষক এ আয়োজনে ফারিয়া প্রতীকীভাবে গতকাল প্রথম আলোর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এটি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতীকী কর্মসূচি, যার মাধ্যমে মেয়েদের নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

শুরুতেই সম্পাদক মতিউর রহমান প্রতিষ্ঠান ও সম্পাদকের দায়িত্ব সম্পর্কে ফারিয়াকে অবহিত করেন। মতিউর রহমান বলেন, ‘সম্পাদক হিসেবে আজকে কোনটি লিড হবে, কী হেডিং হবে—আপনার যেকোনো নির্দেশনা, পরামর্শ আমরা গ্রহণ করবো।’

ফিচার সম্পাদক সুমনা শারমীন ২০০৬ সালের নারী দিবসে প্রতীকী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন উল্লেখ করে বলেন, সংবাদপত্রে যেকোনো মুহূর্তে আগের পরিকল্পনা বদলাতে হয়, এটাই বড় চ্যালেঞ্জ।

ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্স, ঢাকার প্রতিনিধি ফারিয়া। তাঁর স্বপ্ন শিশুদের নিয়ে কাজ করা। ফারিয়া বলেন, ‘প্রথম আলো সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা অসাধারণ। সম্পাদক হিসেবে সবার সহযোগিতা পেয়েছি, যা দায়িত্ব পালনে সহায়ক হয়েছে।’ তিনি রাতে ‘পেজ মেকআপে’র কপি তাঁকে পাঠিয়ে দিতে বলেন, দেখে তিনি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন।

সম্পাদকের কক্ষে সংক্ষিপ্ত বৈঠক শেষে ফারিয়া প্রথম আলোর বার্তাকক্ষ, ফিচার বিভাগ, অনলাইন থেকে শুরু করে সব বিভাগ ঘুরে ঘুরে দেখেন। সাংবাদিকতার খুঁটিনাটি নিয়ে এ সময় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করেন ফারিয়া। কীভাবে কাজ করেন, তা ফারিয়াকে হাতে-কলমে দেখান সংবাদকর্মীরা।

এরপর ফারিয়া বিকেল চারটায় সংবাদ ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন। সভার শুরুতে ফারিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রকাশিতব্য সংবাদের তালিকা। কোন খবরটি মূল প্রতিবেদন হবে, কোন সংবাদ কেমন গুরুত্ব পাবে, তা অবহিত করেন উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ প্রথম আলোর নারী ও শিশুনীতির বিষয়ে আলোচনা করেন। নির্বাহী সম্পাদক (ডিজিটাল) সেলিম খান কোন প্রতিবেদনের পরে কীভাবে পাঠকের মন্তব্য প্রকাশ করা হয়, সে বিষয়টি তুলে ধরেন। জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মানসুরা হোসাইন নারীমঞ্চের সংবাদবিষয়ক ধারণা দেন। এতে প্রথম আলোর বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

শেষাংশে প্রথম আলোর ‘সাত সাহসী’ ‘ঘোড়সওয়ার’ ও ‘কলসিন্দুরের অদম্য মেয়েরা’ শীর্ষক তিনটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। এ সময় প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওরলা মারফি তরুণদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে গণমাধ্যম অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এ সংস্থার হেড অব ইনফ্লুয়েন্সিং কাশফিয়া ফিরোজ, প্রথম আলোর ইংরেজি ওয়েবের হেড অব কনটেন্ট আয়েশা কবির, সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী প্রমুখ।