ফেনীতে মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগ

ফেনী
ফেনী

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় এক মাদ্রাসার খাদেমের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার এক ছাত্রকে (৮) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে নুর ইসলাম (৭০) নামের ওই খাদেম পলাতক। এর আগে গত বছরের আগস্ট মাসে একই মাদ্রাসার তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মাওলানা আবদুল ফাত্তাহ বিন আমিনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার হোস্টেলে তিন ছাত্রকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তখন থেকে তিনিও পলাতক।

মাদ্রাসাছাত্রের বাবা অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার দুপুরে মাদ্রাসার পাশ দিয়ে তাঁর ছেলে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় নুর ইসলাম ছেলেকে ডেকে মাদ্রাসার হোস্টেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ছেলের চিকিৎসা শেষে তিনি মাদ্রাসার খাদেম নুর ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবেন বলে জানান।

স্থানীয় লোকজন জানান, শুক্রবার ওই ছাত্র ধর্ষণের শিকার হলেও পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানেন পরদিন শনিবার। এরপর ওই ছাত্রের অভিভাবকেরা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সমাজপতিদের বিষয়টি জানান। তবে পুলিশ আগের ঘটনায় (মাদ্রাসার সাবেক প্রধান শিক্ষক মাওলানা আবদুল ফাত্তাহ বিন আমিনের বিরুদ্ধে) কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করার জন্য বলেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিষয়টি ছেলে ও তাঁর বাবার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনেছেন। এর আগেও গত বছর ওই মাদ্রাসায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে থানায় মামলা হয়। কিন্তু তৎকালীন সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার না করে এবং ওই ঘটনায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ‘টাকার বিনিময়ে’ মামলাটি শেষ করে দিয়েছিলেন। ওই শিক্ষক পুলিশের সহায়তায় পালিয়ে গেছেন। এ বিষয় নিয়ে ওসি মোয়াজ্জেমের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়েছিল বলেও তিনি জানান। এ কারণে একই মাদ্রাসায় আবারও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটায় তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে পুলিশের কাছে না গিয়ে সামাজিকভাবে বিচার করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

অপরাধের বিষয়ে মাদ্রাসার খাদেম নুর ইসলাম মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি অন্যায় করে ফেলেছেন। ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবেন না। স্থানীয় লোকজনের রোষানলে পড়ার ভয়ে তিনি চট্টগ্রামে পালিয়ে গেছেন।

মাদ্রাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) মাওলানা রুহুল আমিন বলেন, তিনিও বিষয়টি শুনেছেন। তবে খাদেম নুর ইসলাম পালিয়ে যাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিষয়টি বিভিন্নজনের কাছ থেকে শুনেছেন। তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে খাদেম নুর ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।