যৌন ও প্রজননশিক্ষা সবার অধিকার

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দিচ্ছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। পাশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য। গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে।  ছবি: প্রথম আলো
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দিচ্ছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। পাশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য। গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

যৌন ও প্রজননশিক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ বেড়েছে। তবে এ নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়নি। ফলে পরিস্থিতি একই রকম আছে। কিশোর ও তরুণদের যৌন ও প্রজননশিক্ষা একটা অধিকার। এটি নিশ্চিতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতনতা জরুরি। পাশাপাশি দরকার সরকারি-বেসরকারি কার্যক্রমের সমন্বয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে গতকাল রোববার সকালে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক, নীতিনির্ধারক, তরুণ ও এনজিও প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন। ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা: কৈশোর ও তারুণ্যের অধিকার’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো। সহযোগিতায় ছিল ইউনাইটেড ফর বডি রাইটস ও কিংডম অব নেদারল্যান্ডস।

বৈঠকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, কিশোর ও তারুণ্যের সময়ে যৌনশিক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এই জায়গা থেকে শুরু করলে সবাই সহযোগী হবে। এটা দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার, যা পরিবর্তন করা দরকার। কিশোর-তরুণেরা এসব সম্পর্কে জেনে যাচ্ছে, যাবে। কিন্তু তাদের সময়মতো জানার সুযোগ দিতে হবে। যাঁরা শেখাবেন, অর্থাৎ শিক্ষকেরা এই শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে কতখানি ইচ্ছুক, তা নজর দেওয়া দরকার। তথ্য উন্মুক্ত হলেই যে খারাপ হয়ে যাবে, এটা ঠিক নয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘যৌনশিক্ষা নিয়ে সমাজ যে পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে তা লক্ষণীয়। আমরা বসে আছি, তা নয়। আমরা চেষ্টা করছি বলেই আশাবাদী। তবে সরকারের একার পক্ষে সব করা সম্ভব হয় না। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে অবশ্যই এই সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব। আমরা চাই আরও দ্রুত পরিবর্তন আসুক।’

কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মাশফিকা জামান সাটিয়ার বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার বিষয়ে সরকার, বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের একযোগে কাজ করতে হবে। তরুণদের এ বিষয়ে সচেতন করতে অর্থপূর্ণ বিনিয়োগ করতে হবে। যৌন ও প্রজননশিক্ষা সবার অধিকার।

বৈঠকে জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ইকবাল হোসেন বলেন, যৌনশিক্ষা প্রসঙ্গে কনটেন্টের কথা অনেক ওঠে। কনটেন্ট আরও বেশি দিলে এর সমাধান হবে না। এই শিক্ষার পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াটা ঠিক করতে হবে। ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করে স্কুলের ফটক নির্মাণ করা হয়। অথচ স্কুলে পরিচ্ছন্ন বাথরুম নেই। এটা টাকাপয়সার নয়, মানসিক দৈন্য।

বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম। সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী।