আকাশের স্বপ্নপূরণ নিয়ে সংশয়, সাহায্য কামনা

আকাশ মিয়া
আকাশ মিয়া

কাজ করতে গিয়ে দরিদ্র পরিবারের সন্তান আকাশ মিয়ার দেহের ওপরের অংশ পুড়ে গেছে। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সুস্থ হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চান আকাশ।

মির্জাপুরের আনাইতারা ইউনিয়নের চামারী ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দা আকাশ। তিনি গত ২৮ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় একটি কারখানায় বৈদ্যুতিক কাজ করতে গিয়ে শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিদগ্ধ হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় বাঁশের চাটাইয়ের কাজ করেন চামারী ফতেপুর গ্রামের হতদরিদ্র শ্রমিক তারা মিয়া। তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে আকাশ তৃতীয়। সামান্য উপার্জনে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে তাঁর সংসার চালানো কঠিন। আকাশ এ বছর টাঙ্গাইলের সরকারি মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল উচ্চশিক্ষার জন্য ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার। এ জন্য টাকার জোগাড় করতে ঢাকার নেইম পাওয়ার নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে তিনি ২৮ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় ডেল্টা গার্মেন্টস নামের একটি কারখানায় বৈদ্যুতিক কাজ করতে যান। সেখানে কাজ করার সময় শর্টসার্কিট হলে তাঁর শরীরের ওপরের অংশ পুড়ে যায়। এ ছাড়া লিভারও আক্রান্ত হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। হাসপাতালের চারতলা ব্লু ইউনিটের ১৮ নম্বর বিছানায় তিনি এখন চিকিৎসাধীন।

আকাশের সহপাঠী খন্দকার হৃদয় ও রিফাত হোসেন জানান, হাসপাতালে আকাশ একদিকে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন, অন্যদিকে কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা বলছেন। কিছুতেই লেখাপড়া ছাড়তে চান না। কিন্তু টাকার অভাবে সেই স্বপ্ন পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

হৃদয় ও রিফাত জানান, আকাশের চিকিৎসার জন্য গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টাকা লাগছে। তাঁরা বন্ধুরা মিলে গ্রামের লোকজনের সহায়তায় এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা তুলে চিকিৎসা ব্যয় মিটিয়েছেন। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও প্রায় ৫ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

আকাশের মা উজালা বেগম বলেন, ‘আমাগো অবস্থা আরও খারাপ অয়্যা গেছে। আমরা এমুনই অভাগা বাপ-মা, পোলার লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করা পারি না। নিজের পড়ার খরচের জন্য ও কাজে গেলে। অহন মরবার নইছে। ওরে যে কেমনে বাঁচামু তাও কয়্যা পারাতাছি না। আল্লাহ মুখ তুইলা না তাকালে কে যে দেখব। সবার কাছেই সাহায্য চাই। যেন পুলাডা বাঁচে।’