হামলাকারী শনাক্ত হয়নি ১৫ বছরেও

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলার ১৫ বছরেও হামলাকারীরা শনাক্ত হয়নি। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হলেও তদন্ত এবং বিচারকাজে গতি আসেনি। মামলার আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।

আজ ৬ মার্চ, বৃহস্পতিবার উদীচী ট্র্যাজেডি দিবস। ১৯৯৯ সালের এই দিনে যশোর টাউন হল মাঠে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলা চালানো হয়। নিহত হন ১০ জন। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন অনেকে।

উদীচী ট্র্যাজেডি দিবস উপলক্ষে আজ যশোরে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। উদীচী হত্যা মামলা পুনঃ তদন্ত আন্দোলন কমিটি এ দিনটিকে ‘সংস্কৃতি রক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল কাদের আজাদ বলেন, ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলার মামলাটি পুনঃ তদন্তবিষয়ক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে করা আপিল আবেদন উচ্চ আদালত গ্রহণ করে মামলার ২৩ জন আসামিকে ৩০ দিনের মধ্যে নিন্ম আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। মামলায় অভিযুক্ত ১৮ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন। অন্যদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী দুই সহোদর হাসান ও মিজান র‌্যাবের গুলিতে নিহত হন। এ ছাড়া আরও দুজন আসামি মারা যান। অপর এক ব্যক্তি পলাতক রয়েছেন।

উদীচীর যশোর জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক ডি এম শাহিদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে বোমা হামলার শুরু হয় উদীচীর সম্মেলনের ওই হামলার মধ্য দিয়ে। ওই ঘটনার যদি সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার হতো, তাহলে এ দেশে বোমা হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটত না।

১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ ওই বোমা হামলার পর যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলায় দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একটি বিস্ফোরক দ্রব্য ও অপরটি হত্যাকাণ্ডের। ২০০৬ সালের ২৮ জুন যশোরের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. আবুল হোসেন ব্যাপারী মামলার ২৩ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। মামলার রায়ের আগেই উচ্চ আদালত থেকে সাবেক মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়। সেই সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল আবেদন করেনি।

২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনের উদ্যাগ নেয়। আদালত আপিল আবেদনটি গ্রহণ করে মামলার আসামিদের নিন্ম আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সেই থেকে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।