দৃষ্টি জয় করে পরীক্ষায়

পরীক্ষার টেবিলে আরিফুজ্জামান (বেগুনি জামা) ও মোস্তফা কামাল (সাদা জামা)।  প্রথম আলো
পরীক্ষার টেবিলে আরিফুজ্জামান (বেগুনি জামা) ও মোস্তফা কামাল (সাদা জামা)। প্রথম আলো

চোখে আলো নেই। কিন্তু মনে জ্ঞানের আলো জ্বালাতে তো বাধা নেই। তাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা জয় করে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় এবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় বসেছে দুজন। গতকাল শনিবার তারা বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা দেয়।

ওই দুজন হলো মো. আরিফুজ্জামান ও মো. মোস্তফা কামাল। তারা সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের আবাসিক শিক্ষার্থী। তারা সাপ্টিবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তাদের কেন্দ্র পড়েছে সরকারি গিরিজা শংকর স্কুল অ্যান্ড কলেজে।

এর আগে ২০১৬ সালে সাপ্টিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) অংশগ্রহণ করে আরিফুজ্জামান জিপিএ-৪ ও মোস্তফা কামাল ৩ দশমিক ৯২ পায়।

আদিতমারীর সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের রিসোর্স শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. এরশাদ আলী। তিনি বলেন, আরিফুজ্জামান ও মোস্তফা কামাল জন্মগতভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ২০১২ সাল থেকে তারা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে লেখাপড়া করছে। তারা দুজনই মেধাবী ও পরিশ্রমী শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত। তারা ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করেছে। শ্রুতলেখকের মাধ্যমে পরীক্ষা দিচ্ছে। আরিফুজ্জামান শ্রুতলেখক হিসেবে সরলখাঁ উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির তন্ময় রায় এবং মোস্তফা কামাল শ্রুতলেখক হিসেবে তন্ময়ের সহপাঠী মাইদুল ইসলামের সহায়তা নিচ্ছে।

আরিফুজ্জামানের বাড়ি দুর্গাপুর গ্রামে। বাবা মো. আবদুর রাজ্জাক দিনমজুর। মা শ্যামলী বেগম গৃহিণী। আরিফুজ্জামান বলে, সে শিক্ষক হতে চায়।

মোস্তফা কামালের বাড়ি দুড়াকুটি গ্রামে। তার বাবা লাল মিয়াও দিনমজুর। মা মহিমা আক্তার গৃহিণী। জানতে চাইলে মোস্তফা কামাল ভবিষ্যতে সংগীত বিষয়ের শিক্ষক হতে চায়।