ঘরের বাইরে শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে বেশি

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

ঘরের বাইরে যাওয়া শিশুরাই এবার ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ থেকে ১২ বছরের শিশুর সংখ্যা বেশি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগে ভর্তি হওয়া শিশুদের ওপর করা গবেষণা থেকে এই তথ্য উঠে আসে।

গবেষণায় আক্রান্ত শিশুদের ডেঙ্গুর ধরন, চিকিৎসা নেওয়ার সময় এবং কোন এলাকার বাসিন্দা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়। ২৫ জুলাই থেকে ভর্তি হওয়া ১০০ শিশুর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে বিভাগের অন্যান্য চিকিৎসকেরা এই কাজ করেন। গবেষণায় দেখা যায় নগরের পাহাড়তলী বিশ্ব কলোনি এবং আশপাশের এলাকা থেকে রোগী বেশি এসেছে। এই সংখ্যা প্রায় ১৬ জন।

প্রণব কুমার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগে ভর্তি হওয়া ১০০ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে দেখা যায় ৫ থেকে ৮ বছর বয়সী ৪৩ জন এবং ৯ থেকে ১২ বছর বয়সী ৩৫ জন শিশু। এ থেকে বোঝা যায় যেসব শিশু ঘরের বাইরে অর্থাৎ স্কুলে যায় তাদের মধ্যে ডেঙ্গু বেশি হয়েছে। ঘরের বাইরে তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে সাবধান হওয়া দরকার। এ ছাড়া কোন এলাকার কী পরিমাণ রোগী এসেছে তাও গবেষণায় উঠে এসেছে।

বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত শিশুস্বাস্থ্য বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৩৮ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দিকের ১০০ জনের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। তাতে দেখা যায় শহর এলাকা থেকে রোগী ভর্তি হয় ৬৮ জন। বাকি ৩২ জন এসেছে বিভিন্ন উপজেলা এবং জেলা থেকে। এর মধ্যে রাঙামাটি, বান্দরবান ও নোয়াখালী অন্যতম।

শহরেরর মধ্যে বিশ্ব কলোনি এলাকার আশপাশ থেকে ১৬ জন শিশু আসে। এই এলাকা থেকে অনেক প্রাপ্তবয়স্ক ডেঙ্গু রোগীও চমেক হাসপাতাল এবং ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে ভর্তি হন।

বিশ্ব কলোনির পর খুলশী থেকে ১২ জন, দামপাড়া থেকে ৭ জন, টাইগারপাস ও লালখান বাজার থেকে ৭ জন, আগ্রাবাদের ডবলমুরিং থেকে ৪ জন, বন্দর এলাকা থেকে ৫ জন, দেওয়ানবাজার ও আন্দরকিল্লা থেকে ১২ জন, পাঁচলাইশ থেকে ৩ জন এবং বাকলিয়া থেকে ২ জন শিশু ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়।

শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের কনসালটেন্ট মিত্রা দত্ত বলেন, এখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। বর্তমানে দুজন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। ১৩৬ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। বিভাগের ডেঙ্গু কর্নারে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে আফিফা নামে এক শিশুর অবস্থা খারাপ ছিল। পরে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। এরপর সে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। ১৩৮ জন রোগীর মধ্যে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম ছিল ২৮ জনের। আক্রান্ত রোগীরা গড়ে ৫ থেকে ৭ দিন হাসপাতালে ছিল।