ছেলের সঙ্গে হাতাহাতির পর মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় গাছ থেকে সুপারি পাড়া নিয়ে ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতিদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনায় এক বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে সকালে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া বৃদ্ধার নাম আম্বিয়া খাতুন (৬৫)। তিনি উপজেলার জানখালী গ্রামের হেমায়েত হোসেন তালুকদারের স্ত্রী।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হেমায়েত হোসেন তালুকদারের তিন ছেলে। ছোট ছেলে শহীদ তালুকদারের সঙ্গে ওই দম্পতি বসবাস করতেন। বড় ছেলে আবদুল জলিল তালুকদার ও মেজ ছেলে জহির তালুকদার আলাদা থাকেন।

গতকাল সকালে হেমায়েত হোসেন তালুকদার ছোট ছেলে শহীদকে নিয়ে সুপারি পাড়ার জন্য বাগানে যান। তখন বড় ছেলে জলিল তালুকদার, তাঁর স্ত্রী মাহমুদা বেগম এবং তাঁদের দুই ছেলে আবদুস ছোবাহান ও সরোয়ার সুপারি পাড়তে বাধা দেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে হেমায়েত তালুকদারের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে জলিল তালুকদার বাবার হাতে কামড় দেন। হেমায়েত তালুকদারের চিৎকার শুনে স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন স্বামীকে উদ্ধার করতে গেলে জলিল তালুকদার, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে আম্বিয়া খাতুনের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় তাঁরা আম্বিয়া খাতুনের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে আম্বিয়া খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

হেমায়েত হোসেন তালুকদারের অভিযোগ, ছেলে জলিল তালুকদারের মারধরের কারণে আম্বিয়া খাতুনের মৃত্যু হয়েছে।

মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গতকাল সকাল ১০টার দিকে আম্বিয়া খাতুনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ছেলের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। বিকেল সাড়ে চারটায় হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ জেড এম মাসুদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃতদেহের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।