আত্মহত্যা নয়, কিশোরী মেয়ের হাতেই খুন হন মা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুনের দায় এড়ানোর জন্য পুরো ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল কিশোরী মেয়ে (১৬)। কিন্তু বৃথা গেছে তার সেই চেষ্টা। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মেয়ে জানিয়েছে, মানসিক ভারসাম্যহীন মাকে নিজেই বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে সে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে আনিসুর রহমান বলেন, গত শনিবার সকালে সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে চাঁনতারা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে সদর থানার পুলিশ। সে সময় তাঁর কিশোরী মেয়ে জানিয়েছিল, আত্মহত্যা করেছেন মানসিক ভারসাম্যহীন চাঁনতারা। এ ঘটনায় ওই নারীর ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে রোববার সদর থানায় মামলা করেন। সেদিনই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই কিশোরীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে রোববারই বিচারিক হাকিম জাহিদ হোসাইনের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে।

কিশোরীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, শনিবার ভোরে হুট করে বাড়ির বাইরে চলে যাওয়ার জন্য জেদ করতে থাকেন চাঁনতারা। এ সময় মাকে ঘুমানোর জন্য বলে ওই কিশোরী। কিন্তু না ঘুমিয়ে চাঁনতারা বঁটি নিয়ে এসে মেয়েকে বলেন, ‘নে আমাকে মেরে ফেল।’ একপর্যায়ে রেগে গিয়ে মায়ের গলায় বঁটি দিয়ে টান দেয় সে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান চাঁনতারা। ভয় পেয়ে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে সে। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করে কিশোরী।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহম্মেদ, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান।