নববধূকে মারধরের অভিযোগে এসআই প্রত্যাহার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পুলিশকে না জানিয়ে ধর্ষণ মামলায় আপস করায় বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় নববধূকে (১৮) মারধর করার অভিযোগে আজ সোমবার এক উপপরিদর্শককে (এসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে।

প্রত্যাহার করা ওই এসআইয়ের নাম রিপন মিয়া। তিনি বগুড়ার গাবতলী মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন। অভিযোগের বিষয়ে এসআই রিপন মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আসামি ধরার জন্য গিয়ে দেখি, আসামি ও বাদী একই বাড়িতে রয়েছেন। পরে তাঁরা জানান, ধর্ষণ মামলায় আপস করে তাঁরা দুজনে বিয়ে করেছেন। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’

কোন ধরনের ষড়যন্ত্র—জানতে চাইলে রিপন মিয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে মোবাইলে আলাপ করা যাবে না।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নববধূ ও তাঁর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গাবতলী উপজেলার একটি কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। গত সেপ্টেম্বর মাসে কলেজ থেকে ফেরার পথে ইমরান নামের এক তরুণ তাঁকে উত্ত্যক্ত করায় তাঁর মা বাদী হয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি করা হলে পরের দিন পুলিশ ইমরানকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তী সময়ে গ্রামের লোকজন বিষয়টি আপস-মীমাংসার উদ্যোগ নেন। পরে উভয় পরিবার বিয়ের সিদ্ধান্তে ওই আপস করে। সেই আপসনামা আদালতে দাখিল করা হলে ৩১ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পান ইমরান। এরপর ১ নভেম্বর পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ে হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রিপন মিয়া।

ওই নববধূর অভিযোগ, রোববার রাত ১০টার দিকে তিনি স্বামীর ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। এমন সময় সাদাপোশাকে বাড়িতে এসে এসআই রিপনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইমরানের খোঁজ করেন। তাঁকে খোঁজ করার কারণ জানতে চাইলে এসআই রিপন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁকে না জানিয়ে কেন আপস করা হলো, সেটি জানতে চান তিনি। সেই সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন। এর প্রতিবাদ করলে তাঁকে (নববধূ) বেদম মারধর করা হয়। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পুলিশ সদস্যরা চলে যান।

বগুড়ার গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর হাসপাতালে গিয়ে ওই নববধূর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, তাঁকে মারধর করা হয়েছে। তবে এসআই রিপন বলেছেন, তিনি ওই নারীর সঙ্গে শুধু কথা-কাটাকাটি করেছেন। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে ওই নারীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে এবং পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগের ভিত্তিতে রিপন মিয়াকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।’