মূল আসামিদের ধরতে সময় বেঁধে দিলেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে পানিতে নিক্ষেপের ঘটনার মূল আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য তিন দিন সময় বেঁধে দিয়ে আজ মঙ্গলবার ক্লাসে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার না হলে তাঁরা ফের আন্দোলনে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। 

পুলিশ বলছে, মূল আসামিদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ও মূল আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এসব বিষয় নিয়ে আজ সকালে নগর পুলিশের উপকমিশনার সাজিদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে পলিটেকনিকের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় শিক্ষকেরাও মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

মিডটার্ম পরীক্ষায় অকৃতকার্য এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন ওরফে সৌরভকে ফাইনাল পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার জন্য গত শনিবার দুপুরে নেতা কর্মীরা অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে চাপ দেন। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের তর্কবিতর্ক হয়। এর জের ধরে দুপুরে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে ঘটনাটি ধরা পড়ে।

এ ঘটনায় নগরীর চন্দ্রিমা থানায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অধ্যক্ষ। পুলিশ এখন পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলার এজাহারে উল্লেখ থাকা মূল অভিযুক্তরা গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযানও চলছে। কিন্তু তাদের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে গ্রেপ্তার মোট নয়জনের মধ্যে আরিফুল ইসলাম নামে একজন রয়েছে, যাকে ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে দুর্ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনা তদন্তে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এসএম ফেরদৌস আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি (ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একটি টর্চার সেলের https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1622624/) সন্ধান পায়।

অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, তারা নিজেরাও একটি তদন্ত কমিটি করেছেন। আগামী তিন দিনের মধ্যেই কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা রয়েছে। যারা অভিযুক্ত তাদের কী শাস্তি দেওয়া যায় তা নিয়ে তদন্ত কমিটি করছে।

এদিকে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে ঘটনাটি তদন্ত করছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ। আর ইতিমধ্যে পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। একই সঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।