রক্তের অক্ষরের শপথের স্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু ঐক্যফ্রন্টের

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রক্তের অক্ষরে শপথের স্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, ঢাকা, ৬ নভেম্বর। ছবি: সাইফুল ইসলাম
বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রক্তের অক্ষরে শপথের স্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, ঢাকা, ৬ নভেম্বর। ছবি: সাইফুল ইসলাম

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রক্তের অক্ষরে শপথের স্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করেছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির উদ্বোধন হয়।

এ কর্মসূচির সমন্বয়ক গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া বলেন, এই কর্মসূচি শুধু আবরার হত্যাই নয়, সব রাজনৈতিক হত্যার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক হত্যাকে অন্যভাবে দেখা দরকার। প্রথম স্বাক্ষরটি ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন তাঁর চেম্বার থেকে করে পাঠিয়েছেন।

রেজা কিবরিয়া বলেন, এটা নেতাদের স্বাক্ষর অভিযান না। এটা জনগণের অভিযান। তাঁর বাবা আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে হত্যার পর বাবা হত্যার বিচারের জন্য এ ধরনের কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে কর্মসূচি শেষ করে সবাইকে স্বাক্ষর করা কাপড়গুলো পাঠাতে হবে। বছরের শেষে একদিন তাঁরা জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে তা প্রদর্শন করবেন।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বলেন, বর্তমান ছাত্রলীগের কমিটি দ্বারা ‘গুন্ডামি’ চলছে। বর্তমান সরকারকে খুনি সরকার অভিহিত করে তিনি বলেন, তারা জনগণের স্বাধীনতা হরণ করেছে।

সরকারদলীয় লোকজন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টর্চার সেল প্রতিষ্ঠা করেছে বলে অভিযোগ করেন আ স ম রব। তিনি বলেন, শুদ্ধি অভিযানে যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁরা যেসব নাম বলেছেন তা প্রকাশ হচ্ছে না। ওয়ার্ড কমিশনার না ধরে মূল হোতাদের ধরার দাবি জানান এই ঐক্যফ্রন্ট নেতা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আ স ম আবদুর রব নিজের হাতের রক্ত দিয়ে সাদা কাপড়ে স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়া বাকিরা লাল কালি দিয়ে স্বাক্ষর করেন।

ড. কামাল হোসেন শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় মতিঝিলে তাঁর চেম্বার থেকে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন বলে জানান রব। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বিশেষ কারণে আসতে পারেননি।

ঐক্যফ্রন্টের এই কর্মসূচির পাশে একই সময়ে প্রেসক্লাবের সামনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে নাগরিক ঐক্যের সহযোগী ছাত্রসংগঠন নাগরিক ছাত্র ঐক্য। ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচির শেষের দিকে মাহমুদুর রহমান মান্না নাগরিক ছাত্র ঐক্যের মানববন্ধনে যোগ দেন। ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে অংশ নেননি তিনি। এ ব্যাপারে চানতে চাইলে মান্না প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমাদের প্রোগ্রামটা শেষ করে ওখানে যাব। কিন্তু তার আগেই ওই প্রোগ্রামটা শেষ হয়ে গেল।’

কর্মসূচিতে নাগরিক ঐক্য এবং বিএনপির কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এ ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত এক নেতা জানান, কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে সমন্বয়ের অভাব ছিল।

ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের সহসভাপতি আবু সাইয়িদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহসীন রশীদ, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, বিকল্পধারা বাংলাদেশের নুরুল আমীন প্রমুখ।