সৌদি থেকে ফিরেছেন আরও ৯৬ বাংলাদেশি

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

সৌদি আরব থেকে আরও ৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ কর্মী দেশে ফিরেছেন। গতকাল বুধবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তাঁরা দেশে ফেরেন। এ নিয়ে এই মাসে ৫ দিনে মোট ৪২১ জন ফিরলেন।

১ নভেম্বর ১০৪ জন, ২ নভেম্বর ৭৫ জন, ৩ নভেম্বর ৮৫ জন, ৪ নভেম্বর ৬১ জন ও গতকাল ৬ নভেম্বর ৯৬ জন বাংলাদেশি কর্মী সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন।

বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১০ মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২০ হাজার ৬৯২ জন বাংলাদেশি।

বরাবরের মতো গতকাল ফেরত আসা ব্যক্তিদের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।

গতকাল দেশে ফেরা কর্মীদের একজন কিশোরগঞ্জের তোফাজ্জলের ভাষ্য, মাত্র আড়াই মাস আগে তিনি সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। এর মধ্যেই তাঁকে ফিরতে হলো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহিউদ্দিন জানান, তিনি তিন বছর ধরে সৌদি আরবে ছিলেন। সাড়ে ১৮ হাজার রিয়াল দিয়ে আকামা নবায়ন করেছিলেন। কিন্তু তাকে এখন ধরপাকড়ে পড়ে শূন্য হাতে ফেরত আসতে হলো।

গাজীপুরের মো. হান্নান মিয়া জানান, তিনি ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে। বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও সৌদি পুলিশ রাস্তা থেকে ধরে। আকামা দেখানোর পরও তাঁকে ছাড়া হয়নি।

নোয়াখালীর জয়নাল, ময়মনসিংহের আলম, জামালপুরের সবুজ মিয়া, বরিশালের মামুনসহ আরও অনেকই তাঁদের দুরবস্থার কথা জানান।

ফিরবেন তিন নারী : সৌদি আরবে তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার তিন নারীর আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দেশে ফেরার কথা রয়েছে। পরিবারের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য ওয়েজ আর্নার্স বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিল ব্র্যাক। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাঁদের ফেরার কথা। তাঁরা হলেন শাহিদা, মনোয়ারা, মিনা।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ‘চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ বছরের কোন মাসে কত কর্মী ফিরেছেন, সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি, দুই মাস ধরে ধরপাকড়ের তীব্রতা বেড়েছ। অনেকেই মনে করেন ইকামা থাকলেই বৈধ। কিন্তু কেউ যদি বৈধ ইকামা থাকার পরও যেখানে কাজ করার কথা, সেখানে না করে অন্য জায়গায় কাজ করেন, সৌদি আইন অনুযায়ী সেটাও অপরাধ। বিষয়গুলো কর্মীদের বোঝাতে হবে। আর রিক্রুটিং এজেন্সিকেও বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কোনো কর্মী যেখানে যান, সেখানে গিয়ে সেই কাজ পান। ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।’