বাদল ও খোকার মৃত্যুতে সংসদে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ

সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ও সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদল। ফাইল ছবি
সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ও সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদল। ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ ও বাংলাদেশ জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতীয় সংসদ। আজ বৃহস্পতিবার অধিবেশনে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী উত্থাপিত শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, মইন উদ্দীন খান বাদল ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান রয়েছে। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও শান্তি–সম্প্রীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। সংসদে তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে কথা বলতেন। তাঁর ভাষণ সবার দাগ কেটে যেত।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তবে স্বাধীনতার পর তিনি জাসদে যোগ দেন। তিনি আমাদের ঐক্যজোটের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে আন্দোলন–সংগ্রামের রাজপথে ও সংসদে তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি সব সময় তাঁর অসুস্থতার খবর নিতাম। তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে আমি খবর পেতাম। আজ যখন মৃত্যুর সংবাদটা পেলাম, বড় ধাক্কা লাগে। ভাবতেই পারেনি তিনি এভাবে চলে যাবেন।’ প্রধানমন্ত্রী জানান, লাশ আনার জন্য ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাইকমিশন থেকে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শোকপ্রস্তাবের ওপর শেখ হাসিনা ছাড়াও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ সরকারি ও বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ সাংসদেরা আলোচনা করেন। এ ছাড়া ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকাসহ সংসদে আনা অন্যদের শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। শোকপ্রস্তাব শেষে মরহুমদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সংসদে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। পরে সংসদের অন্যান্য কার্যক্রম স্থগিত রেখে সংসদের বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করা হয়। চলমান সংসদের কোনো সদস্য মারা গেলে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।

মইন উদ্দীন খান বাদলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘তাঁর বক্তব্য আমরা মন দিয়ে শুনতাম। তাঁর থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল, অনেক কিছু জানার ছিল।’

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, তিনি সাংসদ হিসেবে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে সংসদ কার্যক্রম পরিচালনাসহ আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বয়সে আমার ছোট হলেও দীর্ঘদিনের পুরোনো কর্মী ও সহযোগী। জন্মলগ্ন থেকেই তিনি জাসদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবিরোধী সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে বাদল ছিলেন আতঙ্ক। সংসদে তাঁর বাচনভঙ্গি ও দৃঢ়তা আমাদের মুগ্ধ করত।’

শোকপ্রস্তাবেরও পর অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ নাসিম, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, আ স ম ফিরোজ, শাজাহান খান, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বক্তব্য দেন।