সাদেক হোসেন খোকা চিরনিদ্রায় শায়িত

ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে। ঢাকা, ৭ নভেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম
ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে। ঢাকা, ৭ নভেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকার সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে মা–বাবার কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বাদ আসর ধূপখোলা মাঠে খোকার শেষ জানাজা হয়। পরে জুরাইন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। খোকার মরদেহ কবরে নামানোর আগে পুলিশের ১৭ সদস্যের একটি দল ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার আবদুল আউয়ালের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা খোকার প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায়। তাঁরা এই মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেন। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা খোকাকে শেষ স্যালুট জানান। এ সময়ে পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুন নাহারসহ আরও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় খোকার পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেলসহ দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সাদেক হোসেন খোকার তিন দফা জানাজা হয়। বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দেশের মাটিতে তাঁর প্রথম জানাজা হয়। সেখানে দলীয় সাংসদ, ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম ছাড়াও বিভিন্ন দলের রাজনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। দুপুর ১২টায় মরদেহ নেওয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। শহীদ মিনার থেকে কফিন নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে নেওয়া হলে হাজারো নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নেতৃবৃন্দ খোকার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি এমন একসময় চলে গেলেন, যখন খালেদা জিয়া কারাগারে। তিনি তাঁকে শেষ দেখা দেখতে পারলেন না। সাদেক হোসেন খোকার চলে যাওয়ায় যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা পূরণ হওয়ার নয়। এ সময় খোকার বড় ছেলে ইশরাক হোসেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সবার কাছে তাঁর বাবার জন্য দোয়া চান।

বিএনপির কার্যালয় থেকে কফিন নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে। সেখান জানাজায় অংশ নেন দক্ষিণের মেয়র সাইদ খোকনসহ কাউন্সিল ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর সাদেক হোসেন খোকাকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবে। এ ক্লাবের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। এই ক্লাব থেকে নেওয়া হয় জুরাইনে।

সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা দীর্ঘদিন ক্যানসারে ভুগেছেন। তিনি নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত সোমবার বাংলাদেশ সময় বেলা দুইটায় তিনি মারা যান। ২০১৪ সাল থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে দেশের উদ্দেশে খোকার মরদেহ নিয়ে তাঁর পরিবার রওনা দেয়। খোকার মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।