দাফনের মুহূর্তে জানা গেল লাশটি মনিরের

মনির হোসেন
মনির হোসেন

নোয়াখালীর সুবর্ণচরের কেরামতপুর সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত লাশটি উদ্ধারের পর সারা দিন গড়িয়ে গেছে। ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যায় সরকারি কবরস্থানে দাফনের জন্যও নেওয়া হয়। ঠিক ওই মুহূর্তে ফেসবুকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে সেখানে হাজির হন স্বজনেরা। তাঁরা লাশের পরিচয় নিশ্চিত করেন।

এই ব্যক্তির নাম মনির হোসেন (৩৮)। তিনি ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক ছিলেন। মনিরের বাড়ি নোয়াখালী শহরের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কাছে। লাশ উদ্ধারের (বুধবার) তিন দিন আগে তিনি নিখোঁজ হন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার সকালে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের মুখমণ্ডল এবং পিঠের দিকে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। প্রথম দিকে ধারণা করা হয়েছিল কোনো দ্রুতগামী যানবাহনের ধাক্কায় ওই ব্যক্তি নিহত হন। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যার দিকে লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের জন্য শহরের দত্তেরহাটের সরকারি কবরস্থানে নেওয়া হয়।

চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি দাফনের আগ-মুহূর্তে রাসেল পরিচয়ে এক ব্যক্তি থানায় ফোন করেন। তিনি জানান, ফেসবুকের দেওয়া বিবরণের সঙ্গে তিন দিন আগে নিখোঁজ হওয়া তাঁর মামা মনির হোসেনের মিল রয়েছে। পরে রাসেল তাঁর মামি রানি বেগমসহ কয়েক স্বজন মিলে লাশটি মনিরের বলে শনাক্ত করেন।

ওসি সাহেদ উদ্দিন জানান, পুলিশ এখন অনেকটাই নিশ্চিত মনিরকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে লাশ সড়কের পাশে ফেলে গেছে। এ ব্যাপারে এখন হত্যা মামলা হবে। জড়িতদের শনাক্তে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মনির হোসেনের ভাগনে মো. রাসেল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার সকালে রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি তাঁর মামা। তিন দিন ধরে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজা-খুঁজি করেছেন। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে লাশ উদ্ধারের ওই খবর জানতে পেরে তাঁদের সন্দেহ হয়।

রাসেল জানান, বুধবার গভীর রাতে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর মামার মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়। রাসেলের ভাষ্য, তাঁর মামার কোনো শত্রু আছে বলে তাঁদের জানা নেই। মনিরের চার মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আর সবচেয়ে ছোট সন্তানের বয়স দেড় বছরের মতো। মনিরকে ‘হত্যা করায়’ পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।