লিজিং কোম্পানির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকে তলব

ক্যাসিনো-কাণ্ডে শুরুতে যে ৪৩ জনের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অনুসন্ধান শুরু হয়, তার মধ্যে প্রশান্ত কুমার হালদার একজন। তিনি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ ছাড়া তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ফাইন্যান্সেরও সাবেক এমডি। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।

ওই দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে প্রশান্ত কুমার হালদারকে তলব করেছে সংস্থাটি। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাঁকে তলব করে চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রশান্ত কুমার হালদার ও অন্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।

এ ছাড়া আত্মীয়স্বজনকে বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক বানিয়ে পিপলস লিজিংসহ বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির টাকা বিভিন্ন কৌশলে বের করে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারীদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে আত্মসাৎ করে কোম্পানিটিকে পথে বসানোর অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাই তাঁকে ১৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।

সাম্প্রতিক শুদ্ধি অভিযানের শুরুতে দুর্নীতি দমন কমিশন যে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে, তাঁদের মধ্যে প্রশান্ত কুমার হালদারও আছেন। তিনি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকেরও সাবেক এমডি।

এদিকে প্রশান্ত কুমার হালদারের দুর্নীতি অনুসন্ধানের জন্য কিছু তথ্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়েছেন দুদকের কর্মকর্তা। পিপলস লিজিং ও রিলায়েন্স লিজিংয়ে আলাদা চিঠি পাঠিয়ে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে তথ্য ও নথি চাওয়া হয়েছে।

দুদকের চাওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে পিপলস লিজিংয়ের পরিচালনা পর্ষদের নাম ও বিস্তারিত তথ্য। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আমানতকারীদের কাছ থেকে কত টাকা জমা নেওয়া হয়েছে, কত টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের কাছে কত টাকা জমা আছে, সে–সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোন কোন ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানের হিসাব আছে, সেসব তথ্যের পাশাপাশি ব্যাংক হিসাবের বিবরণী চাওয়া হয়েছে।

২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত কোম্পানির কত স্থাবর সম্পদ বিক্রি করা হয়েছে এবং কোম্পানির শেয়ার পোর্টফোলিও থেকে গ্রাহকদের মার্জিন লোনের বিপরীতে কত টাকার শেয়ার বিক্রয় করা হয়েছে, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। ওই অর্থ দিয়ে কী করা হয়েছে বা কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে, সে–সংক্রান্ত ব্যাংক হিসাব বিবরণী দিতে বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে গ্রাহক ছাড়া আর কোন কোন প্রতিষ্ঠানের কত টাকা আমানত হিসেবে নেওয়া হয়েছিল এবং কোন কোন প্রতিষ্ঠানের কত টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য দিতে চিঠিতে বলা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের কাছ থেকে কত টাকা আমানত হিসেবে নেওয়া হয়েছিল বা কত টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে, তাও জানাতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিস্তারিত তথ্যের পাশাপাশি ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমানতকারীদের কাছ থেকে কত টাকা জমা নেওয়া হয়েছে, কত টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের কাছে কত টাকা জমা আছে, তার তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ–সংক্রান্ত ব্যাংক হিসাবও চাওয়া হয়েছে।