বেনারসির আঁচলে ঢাকা নববধূর লাশ

বাস ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায় অটোরিকশাটি। আমতলা, পঞ্চগড়, ৮ নভেম্বর। ছবি: রাজিউর রহমান
বাস ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায় অটোরিকশাটি। আমতলা, পঞ্চগড়, ৮ নভেম্বর। ছবি: রাজিউর রহমান

মাত্র ৩৩ দিন আগে বিয়ে হয়েছিল লাবু ইসলাম (২৭) ও মুক্তি বেগমের (১৯)। শুক্রবার এই নবদম্পতিকে দাওয়াত করেছিলেন মুক্তির দুলাভাই। বিয়ের শাড়ি পরে স্বামী লাবুকে নিয়ে দুপুরে অটোরিকশায় করে পঞ্চগড় জেলা সদরে দুলাভাইয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন মুক্তি। শেষ পর্যন্ত দুলাভাইয়ের বাড়িতে যাওয়া হয়নি তাঁদের। সড়ক দুর্ঘটনায় দুজনকেই ফিরতে হয়েছে লাশ হয়ে।


শুক্রবার বিকেলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে দেখা যায়, মুক্তির লাশ তাঁরই পরনের বেনারসি শাড়ির আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। আর লাবুর লাশটি বিকেল পর্যন্ত পড়েছিল দুর্ঘটনাস্থলে।

নিহত লাবু ইসলাম পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের ডাকবদলি-মাঝিপাড়া এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে। আর তাঁর নববধূ পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের ভেলকুপাড়া এলাকার শরিফুল ইসলামের মেয়ে।

শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার আমতলা এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে বাস ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন লাবু-মুক্তি দম্পতি। দুর্ঘটনায় যাত্রীসহ দুমড়েমুচড়ে বাসের ভেতরে ঢুকে যায় অটোরিকশাটি। এতে চালকসহ অটোরিকশায় থাকা সাতজনই মারা যান।

লাবু ও মুক্তি নবদম্পতির এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দুই পরিবারে। সন্ধ্যায় দুই পরিবারের সম্মতিতে পাশাপাশি লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের ডাকবদলি-মাঝিপাড়া এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।

নিহত লাবু ইসলামের চাচাতো ভাই মো. ফরহাদ বলেন, ‘লাবু একটি করাতকলে কাজ করত। মাত্র এক মাস তিন দিন আগে বিয়ে হয়েছিল লাবু ও মুক্তির। এভাবে অকালে তাদের চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না।’