প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ পরবর্তী প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে: গণপূর্তমন্ত্রী

রাজউক ও ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
রাজউক ও ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ পরবর্তী প্রজন্মকে গুণগত উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সরকার এ রকম দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ নেয়নি, যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ে নিয়েছেন। এ পদক্ষেপ রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।

গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপূর্তমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো দেশের তুলনায় ভালো। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য সরকার নানা সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশে ১০০টির অধিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে, যার অধিকাংশই বিদেশি বিনিয়োগের জন্য করা হচ্ছে। তাই শুধু আলোচ্য প্রকল্পেই নয়, যেকোনো প্রকল্পে বিনিয়োগে আমি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার—এ দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। দেশে যেকোনো উন্নয়ন হতে হবে টেকসই উন্নয়ন। উন্নয়ন টেকসই না হলে ভবিষ্যতে তা আমাদের কোনো কাজে আসবে না।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, পিপিপির মাধ্যমে করা এ চুক্তি সরকারের অত্যন্ত স্মার্ট একটি সিদ্ধান্ত। পূর্বাচল প্রকল্পের স্যানিটেশন, বিদ্যুৎ সুবিধাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে পিপিপির মাধ্যমে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। পূর্বাচল হবে বাংলাদেশের সেরা শহর।

‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহরে পানি বিতরণ ও সরবরাহ সুবিধার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় রাজউক ও ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহরে পানি বিতরণ ও সরবরাহ সুবিধার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় রাজউক ও ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহরে পানি বিতরণ ও সরবরাহ সুবিধার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের মধ্যে আলোচ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়। রাজউকের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ এবং ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ফিলিপ ওয়েই জিং ইউ।

অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথোরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলকামা সিদ্দিকী প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ডেলকট ওয়াটার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফিলিপ ওয়েই জিং ইউ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দায়েম খন্দকার, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের প্রতিনিধি পঙ্কজ সিনহা এবং রাজউকের আলোচ্য প্রকল্পের পরিচালক সাবের আহমেদ। সমাপনী বক্তব্য দেন রাজউকের চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ।

উল্লেখ্য, ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্বাচল নতুন শহরে ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন জনসংখ্যার পানির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে উল্লিখিত প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়, যেটি বাস্তবায়ন করছে রাজউক। প্রকল্পের অবকাঠামো উন্নয়নকাজের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৯–২৩, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২০–৩৩ এবং প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯২ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহরে পানি সরবরাহ করার জন্য বিভিন্ন সেক্টরে ১৫টি গভীর নলকূপ এবং ৩২০ কিলোমিটার রোড এলাইনমেন্ট বরাবর পাইপ লাইনের নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পূর্বাচলে বসবাসের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকবে না। কারণ, ইতিমধ্যে সেখানে অবকাঠামো, সড়ক ও বিদ্যুৎ সেবার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।