গ্রহজনিত জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য সংসদে প্রস্তাব পাস

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি
জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট নানা সংকট মোকাবিলার মাধ্যমে পৃথিবীর সুরক্ষা ও হেফাজতের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে ‘গ্রহজনতি জরুরি অবস্থা ঘোষণার’ প্রস্তাব জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এতে বিশ্বকে এখনই এ বিষয়ে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বুধবার আলোচনা শেষে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাবটি পাস হয়।

জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় এই প্রস্তাবটি এনেছিলেন সরকারি দলের সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। তাঁর প্রস্তাবে বলা হয়, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অস্তিত্বের সংকট, উপর্যুপরি দুর্যোগের ভয়াবহ আঘাত এবং চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার বৃদ্ধি, জীব বৈচিত্র্যের অপূরণীয় ক্ষতি, খাদ্য নিরাপত্তাহীন আশঙ্কা, ক্রমবর্ধমান পানি সংকট, মহাসাগরগুলোর ওপর অভাবনীয় চাপ এবং সম্পদের অমিতচারী ব্যবহারের প্রেক্ষাপটে গ্রহজনিত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হোক।’
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, জরুরি ভিত্তিতে দ্ব্যর্থহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে এবং উচ্চতর লক্ষ্য সামনে রেখে বৈশ্বিক গোষ্ঠীকে এখনই সক্রিয় হতে হবে। এতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট জিরো এমিশনস’ এ পৌঁছানো, তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে এক দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখা এবং দ্রুততম সময়ে স্বল্প কার্বন অর্থনীতিতে রূপান্তর নিশ্চিত করা।

সাবের হোসেন চৌধুরী তাঁর প্রস্তাবে বলেন, চলমান সংকটে সর্বনিম্ন মাত্রার অবদান রাখা সত্ত্বেও সর্বোচ্চ ক্ষতি এবং ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশ ও ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে সকল প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তার অধিকাংশই পূরণ হয়নি। গ্রহজনিত ন্যায়বিচার এবং ক্লাইমেট ইক্যুইটির দাবি, ঝুঁকির মধ্যে থাকা এই দেশগুলোকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে হবে। যাতে তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে। এসব বহুমাত্রিক সংকট মোকাবিলায় বিশ্বের সকল পার্লামেন্ট ও সরকার, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক দ্রুত কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক এবং সকল অংশীজনের সমন্বয়ে অভিন্ন সত্ত্বারূপে আমাদের বাসযোগ্য একমাত্র এই গ্রহটির সুরক্ষা ও হেফাজতের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।

এই প্রস্তাবের ওপর সরকারি দলের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাহাব উদ্দীন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, জাসদের শিরিন আকতার, বিএনপির হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা বক্তব্য দেন।