এসএসসির ফরম পূরণে বাড়তি টাকা আদায়

মাদারীপুর ও বরিশালের গৌরনদীতে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ৬০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কল্যাণ তহবিল, ক্রীড়া, মিলাদ মাহফিল, জরিমানাসহ খরচের নানা খাত দেখাচ্ছে। ইন্টারনেট বিল ও পরিবহন খরচের দোহাইও দেওয়া হচ্ছে।

গৌরনদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণে বাড়তি ফি আদায়ের কোনো অভিযোগ তাঁরা এখন পর্যন্ত পাননি। অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। যেসব বিদ্যালয় সেটা করছে, লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্যমতে, মাদারীপুরের ৪টি উপজেলায় ১৬৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৭০টি মাদ্রাসা রয়েছে। এবার এসএসসি পরীক্ষার সর্বোচ্চ বোর্ড ফি ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫০ টাকা। ৭ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরণ চলবে। বিলম্ব ফি ১০০ টাকা দিয়ে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগরিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও মার্চেন্টস বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ৩ হাজার ১০০ টাকা এবং মিঠাপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। তাঁতিবাড়ি ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে নোটিশ বোর্ডে ফরম পূরণে ২ হাজার ১৪০ টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে আদায় করা হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৬০০ টাকা।

এদিকে গৌরনদী মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় বলছে, ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় ২৭টি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রায় ৪ হাজার নিয়মিত ও ৪০০ অনিয়মিত শিক্ষার্থী অংশ নেবে। ৬ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরণ চলবে। বিলম্ব ফি দিয়ে আরও সাত দিন পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে। ফরম পূরণে মানবিকের জন্য ১ হাজার ৫৯৫ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষার জন্য ১ হাজার ৫৯৫ ও বিজ্ঞানের জন্য ১ হাজার ৬৯৫ টাকা লাগবে এবং অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ১০০ টাকা দিতে হবে বলে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের এক চিঠিতে বলা হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গৌরনদীর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই এ নির্দেশনা মানছে না। উপজেলার খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর চাচা কামাল হোসেন বলেন, তাঁর ভাতিজার কাছে বিদ্যালয়ের কোনো পাওনা নেই। অথচ ফরম পূরণে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

উপজেলার নলচিড়া উচ্চবিদ্যালয়, সরিকল উচ্চবিদ্যালয়, চন্দ্রহার উচ্চবিদ্যালয়, গৌরনদী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাহিলাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বার্থী উচ্চবিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে একই চিত্র পাওয়া গেছে।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আনোয়ারুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই প্রতিটি স্কুলে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বোর্ডের নির্ধারিত ফির বাইরে কোনোক্রমেই অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবে না।