একছাতার নিচে তিন হেল্পলাইন

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন ১০৯–এ ফোন দিলেন এক নারী। সমস্যার কথা শুনে সেবাদাতা বেহেতেরীন সুলতান ভুক্তভোগী নারীকে অপর হেল্পলাইন ৯৯৯–এ ফোন দেওয়ার পরামর্শ দিলেন। খানিক পরে আরেক ব্যক্তি ১০৯–এ ফোন দিয়ে পাসপোর্ট–বিষয়ক তথ্য জানতে চাইলেন। সেবাদাতা তাঁকে অপর হেল্পলাইন নম্বর ৩৩৩–তে ফোন দিতে বললেন।

একই রকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় অন্য হেল্পলাইন দুটির সেবাদাতাদেরও। সরকারি এ তিনটি হেল্পলাইন থেকে পৃথক সেবা পাওয়া যায়। কিন্তু সেবাগ্রহীতারা নির্দিষ্টভাবে কোন নম্বরে কোন সেবা মিলবে, জানেন না বলে সেবা পেতে বিড়ম্বনায় পড়েন। আবার নতুনভাবে সংশ্লিষ্ট হেল্পলাইনে ফোন দিতে হয় বলে সেবা পেতে দেরি হয়। তাতে অনেক সময় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়। সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটে।

এই সমস্যা সমাধানে সমঝোতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে হেল্পলাইন ১০৯, ৯৯৯ ও ৩৩৩ একসঙ্গে কাজ করবে। এতে সাধারণ মানুষ ও আক্রান্ত ব্যক্তিরা সহজে ও স্বল্প সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য ও সেবা পাবেন। আবার সেবাদাতাদের মধ্যেও পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়বে, সেবার পরিধি বাড়বে।

>১০৯, ৯৯৯ ও ৩৩৩ একসঙ্গে কাজ করবে। এতে সহজে ও স্বল্প সময়ে তথ্য ও সেবা মিলবে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ তিনটি হেল্পলাইনের যেকোনোটিতে ফোন দিলে সেবাদাতা সমস্যার ধরন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট হেল্পলাইনে কলটি পাঠিয়ে দেবেন। নতুন করে আর সেবাগ্রহীতাকে ফোন করার ঝামেলায় যেতে হবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। ফলে দ্রুত ও সহজে সেবা পাওয়া যাবে।

ন্যাশনাল হেল্পলাইন ১০৯–এ ফোন করে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর সব ধরনের সেবা ও সহায়তা পাওয়া যায়। সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা নম্বরটি খোলা থাকে। বিনা মূল্যে এ নম্বরে মোবাইল ও টিঅ্যান্ডটি থেকে ফোন করা যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১২ সালের ১৯ জুন থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত এই হেল্পলাইনে ২৮ লাখ ৫১ হাজার ২১১টি ফোন এসেছে। এ হেল্পলাইন সেন্টার থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে।

২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের অধীনে জাতীয় জরুরি সেবা সেন্টার (৯৯৯) চালু করা হয়। ৯৯৯–এ ফোন করে নাগরিকেরা জরুরি মুহূর্তে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিতে পারে। সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা বিনা মূল্যে ফোন করা যায়।

তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে জাতীয় তথ্য বাতায়নের সব ওয়েবসাইটের তথ্য, সরকারি সেবা পাওয়ার পদ্ধতি, বিভিন্ন জেলা-উপজেলাসম্পর্কিত তথ্যসহ অভিযোগ দেওয়ার যাবে।

পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, সমন্বয় করে কাজ করতে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত বিষয় আছে। সেগুলো প্রক্রিয়াধীন। তবে শিগগিরই সেবাগ্রহীতারা এভাবে সেবা পাবেন। আজ বৃহস্পতিবার এ তিনটি হেল্পলাইনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।