রংপুর এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত ছয়টি বগি উদ্ধার

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত ইঞ্জিন ও সাতটি বগির মধ্যে ছয়টি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত ইঞ্জিন ও সাতটি বগির মধ্যে ছয়টি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত ইঞ্জিন ও সাতটি বগির মধ্যে ছয়টি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে এসে আজ শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে এই বগিগুলো সরিয়ে ফেলে।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে বাকি বগি ও ইঞ্জিনগুলো উদ্ধার হলে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রেলের একটি লাইন চলাচলের উপযোগী করে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ট্রেন চলাচল প্রায় ছয় ঘণ্টা পর স্বাভাবিক করা হয়েছে।

ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসন ও পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের পর শুক্রবার সকালে রেল বিভাগ আরও দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান।

বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে আগুন লেগে পুড়ে গেছে ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি। এ ঘটনায় রেলকর্মীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলস্টেশন হয়ে এক্সপ্রেসটি ঢাকা থেকে লালমনিরহাট যাচ্ছিল। উল্লাপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ের ৫০ মিটার দূরে রেলপথ পরিবর্তনের স্থানে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে লাইনচ্যুত ৭টি বগির মধ্যে দুটি বগি মূল রেলপথ থেকে অন্তত ১৫ মিটার দক্ষিণ দিকের ক্রসিংয়ে লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনের ইঞ্জিনটি রেলপথের পাশে উল্টে পড়ে আগুন ধরে যায়। পরে ওই আগুন লাইনচ্যুত আরও ৩টি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় ট্রেনের যাত্রীরা দ্রুত জানালার কাচ ভেঙে এবং দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান। এতে বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। তাঁদের স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এই দুর্ঘটনায় কোনো যাত্রীর মৃত্যু হয়নি।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ট্রেনের যাত্রীদের উদ্ধারে সহযোগিতা করেন। দুর্ঘটনায় রেলকর্মীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। ট্রেনে মোট ১৪টি বগি ছিল। ঘটনার পর শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুর্ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পরে সিরাজগঞ্জ ও কামারখন্দ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানো এবং উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। উল্লাপাড়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের মালামাল সংরক্ষণের জন্য ট্রেনটি ঘিরে ফেলে।

রংপুর এক্সপ্রেসের আহত যাত্রী রংপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়া মহল্লার আদনান সিদ্দিকী উল্লাপাড়া ৩০ শয্যা (সদর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেনটি স্টেশনে আসামাত্রই বিকট শব্দ হয় এবং ভেতরে ঝাঁকুনি শুরু হয়ে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এ সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ট্রেনের দরজা-জানালা চাপ খেয়ে বন্ধ হয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন পাথর দিয়ে ট্রেনটির জানালার কাচ ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করেন।