পেঁয়াজ অনেক, তবু দাম বেশি

বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো। গত বৃহস্পতিবার নীলফামারী শহরের বড় বাজারে।  প্রথম আলো
বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো। গত বৃহস্পতিবার নীলফামারী শহরের বড় বাজারে। প্রথম আলো

নীলফামারী জেলা শহরের বড় বাজারে পেঁয়াজের অভাব নেই। তবে দাম বেশি। শহরের পাইকারি বাজারে গতকাল শুক্রবার ছিল ২০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্য বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো থাকলেও দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। টাঙিয়ে দেওয়া মূল্যতালিকার সঙ্গেও বাজারের দামের সংগতি নেই। দাম বেশি হওয়ায় বেশির ভাগ ক্রেতা পণ্যটি প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে পেঁয়াজ না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন ব্যাগ হাতে।

গত বৃহস্পতিবার বড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে প্রতিদিনের দরের তালিকায় লেখা—প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, রসুন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা, নতুন আদা ১৩০ টাকা, পুরোনো আদা ২৬০ টাকা। কিন্তু এ তালিকার সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের বেশ ফারাক পাওয়া গেল। ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। খুচরা বাজারের তালিকায় পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। নেওয়া হচ্ছিল ২০০ থেকে ২১০ টাকা করে।

বাজার থেকে ব্যাগ হাতে বের হচ্ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল মান্নান বসুনিয়া। তিনি বলেন, ‘কী কিনব ভাই, বাজারে আগুন। সব জিনিসের দাম বেশি। পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা। এ জন্য কিনতে পারিনি। বাসায় যা পেঁয়াজ আছে, তা–ই অল্প করে খেতে হবে।’

জানতে চাইলে পাইকারি ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এখন ১৯০ টাকা দরে বেচছি। বাজারের অবস্থা বুঝে ২০০ টাকাও বেচতে হতে পারে। সকালে যে দামে বেচছি, বিকেলে তার চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাহলে দাম না বাড়িয়ে কী করব?’

ক্রেতারা জানালেন, জেলা শহরের অন্যান্য খুচরা বাজারে দাম আরও বেশি। বৃহস্পতিবার খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। পাশাপাশি কেজিপ্রতি মরিচ ৬০, শিম ৫০, ফুলকপি ৬০, বাঁধাকপি ৩৫, মুলা ২৫, করলা ৪০, রসুন ১৫০ ও পটোলের দর ছিল ৩০ টাকা।

নিউ বাবুপাড়া মহল্লার তৈয়ব আলী সরকার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে এক কেজি পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ১৭৫ টাকা দরে কিনেছি। এখন ওই পেঁয়াজ ২০০ টাকা উঠেছে। মাসে আমার চার কেজি পেঁয়াজ লাগে। এখন একসঙ্গে এত পেঁয়াজ কেনা সম্ভব না। দাম আরও বাড়তে পারে, এ জন্য এক কেজি কিনে রেখেছি। এই পেঁয়াজ অল্প অল্প করে খেতে হবে।’

জানতে চাইলে খুচরা ব্যবসায়ী রঞ্জিত রায় বলেন, ‘কাঁচাবাজারের দাম সকাল-বিকেল বাড়ছে। আমরা বেশি দামে কিনে, বেশি দামে বেচছি। দাম বেশি হওয়ার কারণে বিক্রিও কমে গেছে। কাঁচা পণ্যের দাম বাড়ায় খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’

জানতে চাইলে গতকাল জেলা বিপণন কর্মকর্তা এ টি এম এরশাদুল আলম খান বলেন, আজ (শুক্রবার) প্রতি কেজি পেঁয়াজের পাইকারি দর দেওয়া আছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। খুচরা দর ২০০ থেকে ২১০ টাকা। এর বেশি দাম কেউ নিলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে সাদা কাগজে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর অভিযোগ করতে পারবেন। এদিকে নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৯০ টাকা ও খুচরা বাজারে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিন সকালেই পণ্যটি পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ছিল।

আড়তদারেরা জানান, পাবনা ও কুষ্টিয়ার হাটে পেঁয়াজের আমদানি কম হওয়ায় দাম বেড়েছে।