'আমার সব শেষ, ফারজানা আর শুভ নাই'

‘আমার সব শেষ, ফারজানা আর শুভ নাই।’ আত্মীয়স্বজনদের মুঠোফোনে ফোন করে মর্মান্তিক এই সংবাদ দিচ্ছিলেন আতাউর রহমান।

স্ত্রী জুলেখা খানম ও বড় ছেলে আতিকুর রহমানকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল আতাউর রহমান। হাসপাতালে বাবার পাশে ছোট ছেলে। ছবি: সুজন ঘোষ
স্ত্রী জুলেখা খানম ও বড় ছেলে আতিকুর রহমানকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল আতাউর রহমান। হাসপাতালে বাবার পাশে ছোট ছেলে। ছবি: সুজন ঘোষ

কিছুক্ষণ আগেও আতাউর রহমানের সব ছিল। স্ত্রী আর দুই ছেলে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। এখন স্ত্রী ও এক ছেলে হারিয়ে শোকে বিহ্বল তিনি।

আজ রোববার সকালে চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় একটি ভবনের নিচতলায় গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পর দেয়াল ধসে পাশের রাস্তা ও আরেকটি বাড়ির ওপর গিয়ে পড়ে। এতে সাতজন নিহত হন। নিহত সাতজনের মধ্যে রয়েছেন আতাউর রহমানের স্ত্রী জুলেখা খানম ওরফে ফারজানা (৩৫) ও বড় ছেলে আতিকুর রহমান ওরফে শুভ (৮)।

আতিকুর স্থানীয় সেন্ট ক্ল্যাসিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। সকালে তাকে নিয়ে শিক্ষকের বাসায় পড়াতে যাচ্ছিলেন মা জুলেখা। পাথরঘাটা এলাকার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি ভবনের নিচতলায় হঠাৎ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভবনের দেয়াল ধসে রাস্তার ওপর পড়ে। এতে মা ও ছেলে নিহত হন।

স্ত্রী জুলেখা খানম ও বড় ছেলে আতিকুর রহমানকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল আতাউর রহমান। হাসপাতালে বাবার পাশে ছোট ছেলে। ছবি: সুজন ঘোষ
স্ত্রী জুলেখা খানম ও বড় ছেলে আতিকুর রহমানকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল আতাউর রহমান। হাসপাতালে বাবার পাশে ছোট ছেলে। ছবি: সুজন ঘোষ

আতাউর রহমান চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী। এই দম্পতির আরেক ছেলের নাম আতিফুর রহমান। সে নার্সারিতে পড়ে।

হাসপাতালে এসে বারবার বুক চাপড়াচ্ছিলেন আতাউর। কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল।’

বারবার ছোট ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরছিলেন আতাউর। ফোন করে আত্মীয়স্বজনদের জানাচ্ছিলেন একসঙ্গে দুই প্রিয়জন হারানোর কথা।