আমরা ব্যর্থতা ঢাকতে চাই না: দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশনের পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুদক কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের এক সমাবেশে বক্তব্য দেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ছবি: দুদকের সৌজন্যে
দুর্নীতি দমন কমিশনের পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুদক কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের এক সমাবেশে বক্তব্য দেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ছবি: দুদকের সৌজন্যে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কিছু কর্মকর্তার তথ্য পাচার, সঠিকভাবে তদন্ত না করা এবং বিভিন্ন গাফিলতির কারণে ৩০ ভাগ মামলায় শাস্তি হয় না। কর্মকর্তারা যদি সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে কমিশনের ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। এমনটাই মনে করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

কমিশনের পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুদক কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের এক সমাবেশে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কমিশনের কার্যক্রম হবে স্বচ্ছ ও উন্মুক্ত। আমরা আমাদের ব্যর্থতা ঢাকতে চাই না।’

ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে গিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা যখন নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করতে পারেন না, তাঁরা যখন তথ্য পাচার করেন কিংবা অনুসন্ধান বা তদন্তে নিয়মকানুন অনুসরণ করেন না অথবা অনৈতিকতায় জড়িয়ে পড়েন, তখনই আমাদের ব্যর্থ হতে হয়।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘কর্মকর্তারা যদি সঠিকভাবে কাজ করেন, তাহলে জনআস্থা বাড়বে। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে না পারার কারণে জনআস্থার কিছুটা ঘাটতি হয়তো আছে। সে আস্থা তখনই বাড়বে, যদি আমরা আচরণ, নৈতিক মূল্যবোধ, কর্মপদ্ধতি, অঙ্গীকার, বিশ্বাস অর্থাৎ সার্বিক নৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটাতে পারি।’

ইকবাল মাহমুদ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে আপনি নিজে লজ্জিত হন এবং কমিশনকে লজ্জায় ফেলে দেন।’

আগামী জানুয়ারি থেকে কমিশনে কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের কথা জানান চেয়ারম্যান। এর মাধ্যমে কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। যাঁরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কমিশনের অভিযোগ ব্যবস্থাপনায় কিছুটা দুর্বলতা আছে—অনেকের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একে আরও জবাবদিহিমূলক করার কথা জানান চেয়ারম্যান। অভিযোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণকে সম্পৃক্ত করা যায় কি না, তা ভেবে দেখা হচ্ছে বলে জানালেন ইকবাল মাহমুদ। তাঁর মতে, এটা করা গেলে কমিশনের প্রতি জনআস্থা বৃদ্ধি পাবে।

দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম জানান, গত সাড়ে তিন বছরে দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রম ও মামলায় ১ হাজার ২৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুদক নিজেরাই গ্রেপ্তার করেছে ৮১৬ জনকে।

আমিনুল ইসলাম বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের অনেক সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান করা হচ্ছে। সরকারি কোনো কোনো অফিস হয়তো চায় না দুদকের গণশুনানি হোক, কিন্তু জনগণ চায়। যে কারণে গণশুনানির সময় জনগণ দৃঢ়ভাবে কথা বলেন। গণশুনানি হবে—এমন সংবাদেই অনেক সমস্যার সমাধানও হয়ে যাচ্ছে। আইনকানুন ও বিধিবিধান অনুসরণ করে নির্ধারিত সময়ে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে তিনি কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্‌ত, প্রতিরোধ অনুবিভাগের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ, পরিচালক মো. আক্তার হোসেন ও নাসিম আনোয়ার, উপপরিচালক মো. তালেবুর রহমান প্রমুখ।