পাতাপেঁয়াজের দামও চড়া

শীতের সবজি অনেক দিন আগে থেকে উঠলেও রংপুর নগরের সিটি বাজারে দাম এখনো চড়া। নিম্ন আয়ের মানুষেরা ব্যাগ ভরে সবজি কিনতে পারছেন না। বাজারে পাতাসহ পেঁয়াজ উঠলেও দাম এখনো তেমন কমেনি। কাঁচা মরিচের দামও বেশি।

সিটি বাজার নগরের সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার। এখানে পাইকারি ও খুচরা—দুভাবেই পণ্য বিক্রি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন পণ্যের দর জানা যায়। দাম নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতারা দুই ধরনের কথা বলছেন।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে শীতের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও দাম বেশি হওয়ার কারণ তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভাগীয় শহর রংপুরে দিন দিন মানুষ বেড়েই চলেছে। এত ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সবজির সরবরাহ কম। এ কারণে দাম বেশি।

বাজার ঘুরে জানা যায়, এখানে ভারতীয় পেঁয়াজ নেই। নতুন পাতাপেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা কেজি। পুরোনো পেঁয়াজ প্রকারভেদে ১৬০-১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৬০-৬৫ টাকা কেজি দর কাঁচা মরিচের। নতুন আলু বাজারে এখনো নেই। পুরোনো আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। এ ছাড়া ফুলকপি ৫৫-৬০, মুলা ৩০, বেগুন ৩৫, পটোল ৩৮ ও শিম ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ১৩০-১৩৫, পালংশাক ২৫ ও ধনেপাতা ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে এসব সবজি গড়ে ১০ টাকা কম দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখানে একসঙ্গে কমপক্ষে আড়াই কেজি নিতে হয়। বেশির ভাগ ক্রেতা একসঙ্গে এত সবজি নিতে চান না বলে খুচরা বাজার থেকে কেনাকাটা করেন।

কথা হয় বাজারে আসা কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে। একজন ক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পেঁয়াজ নিয়ে এত কিছু হলো, দাম কি কমল? নতুন পাতাপেঁয়াজ কিনলাম ৮৫ টাকা কেজি। সেখানে পেঁয়াজের চেয়ে পাতাই বেশি।’

নগরের নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার রাজু আহমেদ বলেন, ‘পাঁচ দিন আগেও বাজারে এসব সবজির দাম যা ছিল, সে অনুযায়ী কোনো সবজির দামই কমেনি। অথচ বাজারে প্রচুর পরিমাণে সবজির আমদানি। কেন যে কমছে না, তা বুঝতে পারছি না।’

জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতা এনামুল হক বলেন, পাইকারি বাজার থেকে কিনে এনে সামান্য লাভ হয়। বাজারে শীতের সবজি এখনো সেভাবে আসেনি। তাই দাম হয়তো কিছু বেশি।

সিটি বাজারে শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শাক, লাউসহ অন্যান্য সবজির পাইকারি ব্যবসায়ী মশিয়ার রহমান। তিনি বলেন, শীতের সবজি বাজারে এখন কম উঠেছে। কিন্তু চাহিদা বেশি। তাই হয়তো দাম একটু বেশি। তবে আশা করা যায়, অল্প কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে সবজির দাম কমে যাবে।

এ বিষয়ে কথা হয় নগরের সবজি এলাকাখ্যাত খটখটিয়া এলাকার কৃষক সুরুজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার আগাম সবজির উৎপাদন কম হয়েছে। তবে কিছুদিনের মধ্যে নতুন কিছু সবজি বাজারে উঠবে। তখন হয়তো দাম কমতে পারে। কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টির কারণে অনেকের সবজিখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক সরওয়ারুল হক বলেন, বৃষ্টিতে রংপুর অঞ্চলে সবজিখেত তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এখন আগাম আবাদের সবজি উঠেছে। পুরোদমে সবজি নামতে একটু সময় লাগবে। তবে সবজির দাম কমে যাবে।