চেক ও নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দুই কর্মচারী রিমান্ডে

চেক ও নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দুই কর্মচারীর অবৈধ আয়ের উৎস জানতে চায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাই তাঁদের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে সংস্থাটি।

শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুই কর্মচারী হলেন নজরুল ইসলাম ও তছলিম উদ্দিন।

নজরুল ইসলাম একসময় চট্টগ্রাম জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কার্যালয়ের শিকলবাহক (চেইনম্যান) ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকেসহ তিনজনকে তাৎক্ষণিক বদলির নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

এরপর তাঁর কর্মস্থল হয় ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদে। কিন্তু এরপরও নিজেকে বদলাননি তিনি। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নজরুল ইসলাম ধরা পড়েন দুদকের হাতে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে পাওয়া যায় প্রায় ৯১ লাখ টাকার কমিশনের চেক ও সাড়ে ৭ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম নগরের শপিং কমপ্লেক্সের দ্বিতীয়তলার ‘আনুকা’ নামের একটি কাপড়ের দোকান থেকে নজরুলকে আটক করা হয়। ওই দোকানসহ এ শপিং মলে তাঁর ইয়ানা নামের একটি কাপড়ের এবং আরেকটি খাবারের দোকান আছে। একই সময়ে ওই দোকানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী তছলিম উদ্দিনকেও পাওয়া যায়। তাঁর পকেটে ৫৭ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় দুদক কার্যালয়ে মামলা হয়েছে।

দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার হোসেন আজ শুনানিতে আদালতকে বলেন, সামান্য কর্মচারী হয়ে দুজনের কাছে নগদ ও লাখ লাখ টাকার চেক পাওয়া যায়। তাঁরা দীর্ঘদিন থেকে জেলা প্রশাসনের এলএ শাখায় আসা লোকজনকে হয়রানি করে আসছেন। সরকারি অধিগ্রহণ করা বাড়ি ও জমির মালিকেরা ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য এলে ওই দুজনকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে দিতে হতো। নইলে টাকা পাওয়া যেত না। ওই টাকার ভাগ চলে যেত সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত। দুজনের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ রয়েছে। তাঁদের চক্রে আর কে রয়েছে, এই টাকা ও সম্পদের উৎস কী তা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন নজরুল শাড়ি কেনার জন্য টাকাগুলো রেখেছিলেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ। কোনো ধরনের অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। তাদের রিমান্ড বাতিল করা হোক।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুই কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ মাহাবুবুল আলম জানান, আদালতের আদেশটি পাওয়ার পর দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবেন।