ঘাটসংকটে ফেরিজট

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় ঘাটসংকটের কারণে ফেরিগুলো ভিড়তে পারছে না। ঘাটে অধিকাংশ সময় ফেরিজট লেগে থাকছে। একটি ফেরি আনলোড করতে করতে আরও ফেরি এসে যাওয়ায় ঘাটে ভিড়তে সময় লাগছে। গত সোমবার ৫ নম্বর ঘাটে।  ছবি: প্রথম আলো
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় ঘাটসংকটের কারণে ফেরিগুলো ভিড়তে পারছে না। ঘাটে অধিকাংশ সময় ফেরিজট লেগে থাকছে। একটি ফেরি আনলোড করতে করতে আরও ফেরি এসে যাওয়ায় ঘাটে ভিড়তে সময় লাগছে। গত সোমবার ৫ নম্বর ঘাটে। ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় ঘাটসংকটের কারণে অধিকাংশ সময় ফেরির জট লেগে থাকছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, নাব্যতা–সংকটের কারণে ঘাটগুলো উঁচু হয়ে আছে। নিচু স্তরে ঘাট নামানোর মতো জায়গা না থাকায় সব কটি ঘাট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য জট দেখা দিচ্ছে।

গত সোমবার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে সকাল সাড়ে দশটার দিকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায় রো রো ফেরি কেরামত আলী। বেলা ১১টার দিকে দৌলতদিয়ায় ৫ নম্বর ঘাটের কাছে পৌঁছায়। এরপর ঘাটে ভেড়ার অপেক্ষায় থাকে। এর আগে আনলোডের অপেক্ষায় ছিল বড় ফেরি শাহ জালাল। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘাটে এসে হাজির হয় খানজাহান আলী। এভাবে ঢাকা, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, ভাষাসৈনিক ডা. গোলাম মাওলা ফেরি এসে ভেড়ে। কেরামত আলীর ঘাট পেতে সময় লেগে যায় এক ঘণ্টার মতো।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, যাত্রী এবং যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় ১৮টি ফেরি চলাচল করে। এর মধ্যে একটি চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে চলে গেছে। বাকি ১৭টির মধ্যে দুটি বড় ফেরি বিকল হয়ে বসে আছে। চলাচল করছে ১৫টি। ফেরি ভিড়তে পাটুরিয়ায় চারটি এবং দৌলতদিয়ায় ছয়টি ঘাট রয়েছে। পাটুরিয়ার ৪ নম্বর ঘাটের কাছে নাব্যতা দূর করতে ড্রেজার (খননযন্ত্র) বসানো হয়েছে। এ কারণে অধিকাংশ সময় এ ঘাটে ফেরি ভিড়তে পারছে না। 

দৌলতদিয়া প্রান্তে ছয়টির মধ্যে ভয়াবহ ভাঙনে গত ৪ অক্টোবর ১ নম্বর এবং পরদিন ২ নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়ক বিলীন হয়ে যায়। কয়েক দিন পর ভাঙনে ৩ নম্বর ঘাটও বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক বালুভর্তি বস্তা ফেলে অর্ধেকটা সচল করা হয়। ৪ নম্বর ঘাটে সাধারণত মাঝারি বা কেটাইপ আকৃতির ফেরি ভেড়ে। ৫ নম্বর ঘাট বড় ফেরির জন্য এবং ৬ নম্বর ঘাট শুধু ছোট বা ইউটিলিটি ফেরির জন্য নির্মিত। দ্রুত পানি কমে যাওয়ায় নাব্যতা–সংকটের কারণে এক সপ্তাহ ধরে ৬ নম্বর ঘাটও বন্ধ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সচল রয়েছে ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট। ৩ নম্বর ঘাটটি অনেক খাড়া হওয়ায় ফেরিতে গাড়ি ওঠানো–নামানোয় সমস্যা দেখা দেয়। 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) গত সোমবার সকালে ৩ নম্বর ঘাটের পাশে লো–ওয়াটারে আরেকটি ঘাট বসানোর কাজ শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে ফেরি ভিড়তে না পেরে দীর্ঘ সময় ঘাটের কাছে অপেক্ষায় থাকছে।

বিআইডব্লিউটিএর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, নাব্যতা–সংকটের কারণে প্রতিটি ঘাট খাড়া হয়ে গেছে। কিন্তু গভীরতার কারণে কোনো ঘাট প্রয়োজন অনুযায়ী নামানো সম্ভব হচ্ছে না। 

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বলেন, ঘাটে ফেরির জট লেগে যাচ্ছে। আরেকটি ঘাট চালু করা দরকার।