উন্নয়নে দেশ গতিশীল হলেও মানুষের নিরাপত্তা নেই

সমমনা আইনজীবী সংসদের ১৫তম বর্ষপূর্তিতে বক্তব্য দেন সুলতানা কামাল। ছবি : প্রথম আলো
সমমনা আইনজীবী সংসদের ১৫তম বর্ষপূর্তিতে বক্তব্য দেন সুলতানা কামাল। ছবি : প্রথম আলো

উন্নয়নে দেশ গতিশীল হলেও মানুষের মধে৵ নিরাপত্তাবোধ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, রাস্তায় বের হলে প্রাণ নিয়ে বাসায় ফিরতে পারবে কি না, মানুষের মধে৵ শঙ্কা রয়েছে। সন্তানেরা হারিয়ে যায়, তাদের খোঁজে পাওয়া যায় না। নারী নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেমে নেই।

আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমমনা আইনজীবী সংসদের ১৫ বছর পূর্তি ও নবীন আইনজীবীদের বরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুর্নীতিমুক্ত বিচারালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ সপক্ষের চট্টগ্রামের আইনজীবীরা ১৫ বছর আগে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে।

ব্যক্তিগত প্রত্যাশা পূরণের আশায় জাতীয় সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেলেও সমাজের কিছু মানুষ চুপ করে আছেন উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, ঢাকাসহ প্রতিটি শহর দূষিত হচ্ছে। কক্সবাজারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’, ‘আইলা’ ও সর্বশেষ ‘বুলবুল’-এর মতো বড় বিপর্যয় থেকে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করেছে। কিন্তু এগুলো ধ্বংস হয়ে গেলেও কেউ কিছু বলছি না।

রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনগণ উল্লেখ করে বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল বলেন, যে সমাজে মানবাধিকার বিরাজ করবে সে সমাজে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করা যায়। আজকে নির্যাতনের শিকার লোকজন বিচার চায় না। অভিজ্ঞতায় তারা বলে বিচার পাবে না।

বর্তমানে কেউ চাইলেও দুর্নীতিমুক্ত থাকতে পারেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রকোপ পড়েছে। একটি ট্রেনের টিকিট কিনতে গেলে বাড়তি টাকা দিতে হয়। চাকরির আবেদন করে কীভাবে এটি পাবে যোগাযোগ করতে হয়। নইলে চাকরি হয় না। যেকোনো কিছুতে দুই টাকা বেশি দিতে হয়। এভাবে পাঁচ হাজার, পাঁচ লাখ দিতে হয় মানুষকে।

৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া এই দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মানসম্মান রক্ষায় প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান সুলতানা কামাল।

সমমনা আইনজীবী সংসদ চট্টগ্রামের সভাপতি রফিকুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধে৵ বক্তব্য দেন সালেহ উদ্দিন হায়দার সিদ্দিকী, আখতার কবির চৌধুরী, মজিবুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, চন্দন দাশ, জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ, মাহবুবুল আলম, জাহেদ বীরু, তৌহিদুল মনির প্রমুখ।