টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের আটক ১০৯ শিশুর মধ্যে ৪৩ জন ফিরল পরিবারে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত হয়ে গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক থাকা ১০৯ শিশুর মধ্যে ৪৩ জনকে স্ব স্ব অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে অভিভাবকদের কাছে এই শিশুদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এই ৪৩ জনসহ মোট ৫৯ শিশুর জামিনাদেশ পৌঁছায় উন্নয়ন কেন্দ্রে।

টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক এহিয়াতুজ্জামান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জামিনাদেশ পাওয়া যেসব শিশুদের অভিভাবকেরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কেবল তাদেরই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদের যোগাযোগ সাপেক্ষে অন্যদেরও মুক্তি দেওয়া হবে।

র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত হয়ে গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে মোট ১২১ জন শিশু আটক ছিল। গত ৩১ অক্টোবর এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়। ওই দিনই প্রতিবেদনটি নজরে আনলে হাইকোর্ট ১২ বছরের নিচে থাকা ১১ শিশুর মুক্তি ও ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে থাকা ১০৯ শিশুকে ৬ মাসের জামিন আদেশ দেন। পরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের নিয়োগ করা আইনজীবী এই ১০৯ শিশুর জন্য স্ব স্ব শিশু আদালতের সন্তুষ্টি নেন।

টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রবেশন কর্মকর্তা কে এম ওবায়দুল্লাহ আল মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী মোবাইল কোর্টের (ভ্রাম্যমাণ আদালত) মাধ্যমে আসা ১২ বছরের নিচে থাকা ১১ শিশুকে আমরা মুক্তি দিয়েছি নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পরপরই। বাকি ১০৯ জনকে (১২ থেকে ১৮ বছর) সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে ৬ মাসের জামিন দেওয়া হয়েছিল। এসব শিশুদের জামিনের সুবিধার্থে হয়রানি কমাতে আমাদের পক্ষ থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনিই কাগজপত্র ঠিকঠাক করে যোগাযোগ করলে শিশুদের জামিন দেন সংশ্লিষ্ট আদালত। এর মধ্যে ৫৯ জনের জামিনাদেশ আমরা হাতে পেয়েছি। বাকিদের জামিন আদেশও পাওয়া যাবে দু-এক দিনের ভেতর।’

শিশু আইন অনুযায়ী, অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, অপরাধে জড়িত থাকা শিশুর বিচার শুধু শিশু আদলতেই হবে। কিন্তু তা না করে বিভিন্ন সময় শিশুদের দণ্ড দিয়ে আসছিলেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মধ্যে এ বছরের ৩ মে থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ১২১ শিশুকে দণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই শিশুদের রাখা হয় টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে। এ নিয়ে (আইনে মানা, তবুও ১২১ শিশুর দণ্ড শিরোনামে গত ৩১ অক্টোবর প্রথম আলোতে ওই প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে ওই দিনই ১২ বছরের নিচে সব শিশুর মুক্তি ও ১২ থেকে ১৮ বছরের থাকা শিশুদের ৬ মাসের জামিন দেওয়া হয়। এ আদেশের ১২ দিন পর মুক্তি পায় ১১ শিশু। ভেতরে থেকে যায় জামিন প্রাপ্য এই ১০৯ শিশু।