কুষ্টিয়ায় চালের দাম কমেছে

চালের ছবিটি প্রতীকী।
চালের ছবিটি প্রতীকী।

কুষ্টিয়াবাসীর জন্য স্বস্তির খবর নিয়ে এসেছে চালের দাম। এই জেলায় চালের দাম কেজিতে দুই টাকা করে কমেছে। গত সোমবার প্রতি কেজি চাল ৪৬ টাকায় বিক্রি হলেও আজ শুক্রবার ৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে চালের দাম দাম বাড়তে থাকে। ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত মিনিকেট চাল প্রতি কেজিতে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এরপর প্রশাসনের নজরদারিতে সেই দাম পড়তে শুরু করেছে। একই সঙ্গে আগের তুলনায় ফরমায়েশও কম পাচ্ছেন চালকল মালিকেরা। গত তিন দিনে ৫০ কেজির বস্তার দাম ১০০ টাকা করে কমেছে। মিলগেটেই ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ওই হিসাবে কেজি প্রতি চালের দাম পড়ছে ৪৪ টাকা। গত সোমবার এক কেজি চালের দাম ছিল ৪৬ টাকা।

চালের দাম কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে কয়েকজন চালকল মালিক বলেন, মোকামে বেচাকেনা নেই। তাই দাম পড়ে গেছে। এ ছাড়া প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মোকামে তদারকি শুরু করায় চালকল মালিকেরা চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০ টাকা কমিয়ে দিয়েছেন।

মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১ নভেম্বর হঠাৎ করেই মিনিকেট চালের দাম বাড়তে থাকে। তখন চালকল মালিকেরা বলেছিলেন, সরকার ধান কেনা শুরু করায় ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা হাটে ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতেই চালের দাম ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে কেজিপ্রতি ৭ টাকা বেড়ে যায়।

গত মঙ্গলবার থেকে মোকামে চালের দাম কেজিতে ১ টাকা কমিয়েছেন চালকল মালিকরা। আগের দরের তুলনায় তাঁরা মিলগেটে পাইকারিতে চালের দাম ১ টাকা কম রাখছেন। তবে খুচরা বাজারে এখনো এর কোন প্রভাব পড়েনি। আজ শুক্রবার চালের দাম কেজিতে আরও ১ টাকা কমে যায়।

লিয়াকত রাইস মিলের মালিক হাজি লিয়াকত বলেন, চালের দাম কেজিতে ২ টাকা কমেছে। এখন মিনিকেট চাল মিল গেটে প্রতি কেজি ৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কয়েকজন চালকল মালিক বলেন, ধানের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। নতুন ধান বাজারে আসছে, পুরাতন ধানও বাজারে রয়েছে। চালকল মালিকেরা যাচাই–বাছাই করে ধান কিনছেন। বাজারে নতুন স্বর্ণা জাতের মোটা ধান মাত্র ৬১০ থেকে  ৬৫০ টাকা ও সরু জাতের কয়েকটি জাতের ধান ৯৫০ থেকে ৯৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে চালের বাজারেও নতুন করে আর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।

চালকল মালিকদের দাবি, কুষ্টিয়ার মোকামে ৪৪টি অটোরাইস মিলে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার টন চাল উৎপাদন হয়। হাসকিংমিলে ২ হাজার টন। সব মিলিয়ে উৎপাদনের পরিমাণ গড়ে ১২ হাজার টন। কিন্তু গত চার দিনে এই মোকামে সব মিলিয়ে মাত্র ৩ থেকে ৪ হাজার টন চালের ফরমায়েশ এসেছে। বাকি ৮ হাজার টন মজুত হয়ে যাচ্ছে। সামনের কয়েক দিন যদি ফরমায়েশ কমে যায় তাহলে সবার মিলেই চালের ব্যাপক মজুত হয়ে যাবে।

দাদা রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী ও কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, মোকামে চাল দাম পড়ে যাচ্ছে। ফরমাশও কমে গেছে। চাল নিয়ে আর কোনো সমস্যা নেই। তবে এই অবস্থা কিছু দিন থাকলে চালকল মালিকদের লোকসানে পড়ার আশঙ্কা আছে।