উপাচার্যের সঙ্গে ছাত্রলীগের ডাকসু প্রতিনিধিদের সভা, জানেন না ভিপি

গতকাল শুক্রবার উপাচার্যের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে সভা করেন অনেক ডাকসু প্রতিনিধি। ছবি: প্রথম আলো
গতকাল শুক্রবার উপাচার্যের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে সভা করেন অনেক ডাকসু প্রতিনিধি। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে গতকাল শুক্রবার রাতে সভা করেছেন ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) প্রতিনিধিরা। অথচ এ সভার বিষয়ে ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকে জানানোই হয়নি। ছাত্রলীগের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁদের না জানিয়ে কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘মুক্তির আন্দোলন’ করায় সভার বিষয়ে তাঁকে জানানো হয়নি।

গত মার্চে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ভিপি নুরুল হক ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হন। গতকাল রাতে উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় নুরুল ও আখতার ছাড়া ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত অধিকাংশ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘ভিপি নুরুল হক দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ও পেঁয়াজ নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের না জানিয়েই তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করছেন। তাহলে তাঁকে আমরা সভার বিষয়ে কেন জানাব?’

তবে ভিপি নুরুলের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর বিষয়টি নতুন নয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকসুর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ছাত্রলীগের প্রতিনিধিরা এককভাবেই নিয়ে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা আমাকে কিছু জানান না। ডাকসুকে তাঁরা ডাকসুলীগে পরিণত করেছেন। উপাচার্যের ভূমিকায় মনে হয়, তিনি শিক্ষার্থীদের উপাচার্য নন, বরং ছাত্রলীগের উপাচার্য; ডাকসুর সভাপতি নন, বরং ডাকসুলীগের সভাপতি। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ভিপি হিসেবে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার নয়, জাতীয় জীবনের সংকট নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার আছে। ছাত্রলীগ আমার এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’

জানতে চাইলে উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকালের সভাটি আনুষ্ঠানিক কোনো সভা ছিল না। ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী দুই দিন আগে বলেন, তাঁরা আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। পরে গতকাল সভাটি হয়।’

তবে এজিএস সাদ্দাম হোসেন আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের সভাটিকে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক—দুটিই বলা যায়। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসার আগেই গণরুমে বাংকবেড স্থাপন ও ক্যাম্পাসে ইজিবাইকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থাপনা উন্নত করা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, মোকাররম ভবন ও কাজী মোতাহার হোসেন ভবনে ক্যানটিন নির্মাণ, নতুন ভবন নির্মাণ ও টিএসসির আধুনিকায়ন নিয়েও সভায় ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।