কর্মবিরতিতে ট্যাংকলরি বন্ধ

১৫ দফা দা‌বি‌তে ১ ডি‌সেম্বর থে‌কে অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার রাতের ছবি। আফরিন ফিলিং স্টেশন, বোসপাড়া, রাজশাহী। ছবি: শহিদুল ইসলাম
১৫ দফা দা‌বি‌তে ১ ডি‌সেম্বর থে‌কে অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার রাতের ছবি। আফরিন ফিলিং স্টেশন, বোসপাড়া, রাজশাহী। ছবি: শহিদুল ইসলাম

জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, পেট্রল পাম্প মালিক সমিতিসহ জ্বালানি ব্যবসায়ীরা। আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে ওই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। রাজশাহী ও রংপুরেও কর্মবিরতি চলছে।

শ্রমিকেরা পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল ডিপোর তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রেখে ওই কর্মসূচি পালন করছেন। ফলে খুলনাসহ ১৫ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

রংপুরে পেট্রল পাম্পগুলোতে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু। ছবি: মঈনুল ইসলাম
রংপুরে পেট্রল পাম্পগুলোতে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু। ছবি: মঈনুল ইসলাম

আন্দোলনকারীরা বলছে, দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক অমীমাংসিত দাবি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা তাল বাহানা করছেন। বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ফিলিং স্টেশন তথা জ্বালানি ব্যবসায়ীদের ওপর বিভিন্ন দপ্তর থেকে বিভিন্ন ধরনের বিধান অযথা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো মেনে নিয়ে জ্বালানি ব্যবসা করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে জ্বালানি ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন।

বগুড়ার বাইপাস সড়কের পেট্রলপাম্প। সকাল ৬টা থেকে বগুড়ার বেশির ভাগ পেট্রলপাম্পে জ্বালানি তেল বিক্রি, ডিপো থেকে উত্তোলন এবং পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ছবি: সোয়েল রানা
বগুড়ার বাইপাস সড়কের পেট্রলপাম্প। সকাল ৬টা থেকে বগুড়ার বেশির ভাগ পেট্রলপাম্পে জ্বালানি তেল বিক্রি, ডিপো থেকে উত্তোলন এবং পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ছবি: সোয়েল রানা

খুলনা তেল পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন বলেন, কর্মবিরতি চলাকালে খুলনার পদ্মা, মেঘনা, যমুনা তেল ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রয়েছে। খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় চলছে না ট্যাংকলরির চাকা। একই সঙ্গে পেট্রল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

১৫ দফা দাবিগুলো হচ্ছে: জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে সাত শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট না-কি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি সুনির্দিষ্টকরা, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা প্রণয়ন, ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধি, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ পেট্রোল পাম্পের প্রবেশদ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল, বিএসটিআই আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ব্যতিত সরকারি অন্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান ডিলার বা এজেন্টদের অযথা হয়রানি বন্ধ, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।